জাগো জনতা অনলাইন।। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীর পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি)  বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. শাহজামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অধ্যাপক রুহুল আমিনকে আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কেন্দ্রে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, পরীক্ষা না দেওয়ার পরও এক শিক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. রুহুল আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক পদ থেকে এবং আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কেন্দ্রে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ওই দুই পদে নতুন দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাইয়া ইয়াসমিন একটি মিডটার্ম পরীক্ষা না দিয়েও ফলাফল পেয়েছেন। তাঁকে পাস করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আবু সাঈদ নিহতের পর থেকে ওই ছাত্রলীগ নেত্রী পলাতক।

ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়ার সহপাঠী রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে তাঁদের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কোর্সের পরীক্ষার দিন তিনি সুরাইয়াকে পরীক্ষা দিতে দেখেননি।

তবে কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন দাবি করেছেন, তিনি জুলাই-আগস্টের আগে ওই পরীক্ষা নিয়েছেন। সুরাইয়া ওই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিনও দাবি করেন, তিনি পরীক্ষা দিয়েছেন। সবাই তাঁকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বললেও ২০২৩ সাল থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

এদিকে পরীক্ষা না দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার ঘটনা তদন্তে গতকাল রাতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তানজিউল ইসলামকে আহ্বায়ক, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়াকে সদস্যসচিব করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. ইলিয়াছ প্রামাণিককে সদস্য করা হয়েছে।