ঢাকা | নভেম্বর ২৪, ২০২৪ - ১১:২৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বায়ু দূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিশু-বৃদ্ধরা

  • আপডেট: Monday, July 10, 2023 - 4:01 am

মোঃ খায়রুল আলম খানঃ দেশে বায়ু দূষণ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

বায়ু দূষণের প্রভাব: শিশু এবং প্রবীণদের জীবন রক্ষা” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

শনিবার (৮ জুলাই) গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আরবান প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও আর্টিস্টিক কমিউনিকেশনের সহযোগিতায় ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ু দূষণের ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮২,০০০ মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।

এছাড়া বিশ্বব্যাংকের আরেক সমীক্ষায় বলা হয়, দেশের দূষণ-প্রবণ এলাকার জনসংখ্যার প্রায় ১৪% মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছেন।

সাম্প্রতিক বছরে বায়ু দূষণজনিত মৃত্যু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

এতে বলা হয়, ২০১৯ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ১৭৩,৫০০ এ পৌঁছেছে। যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৫০,০০০ বেড়েছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের এ সংক্রান্ত প্রকল্পের পরিচালক জোয়ানা ডি রোজারিও বলেন, “বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার, হাড়, লিভার এবং কিডনির ক্ষতি, হার্টের সমস্যা এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাসহ বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।”

গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, “অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণে গাজীপুরে বায়ু দূষণ একটি বড় উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

কারখানাগুলোকে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) করতে বাধ্য করতে কঠোর পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে অধ্যাপক কাদের বলেন, “শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের উচ্চ মূল্যের কারণে তাদের ইটিপি চালু করতে অনিচ্ছুক, যা বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে।”

তার মতে, “গাজীপুর শহরের জন্য একটি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “একটি মহাপরিকল্পনা না থাকায় গাজীপুরে বাণিজ্যিক এলাকা, শিল্প কারখানা এবং আবাসিক এলাকা মিশ্র হয়ে গেছে, যা বায়ু দূষণে অবদান রাখে।”

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে গাজীপুর সবচেয়ে দূষিত জেলা হিসেবে উঠে এসেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক এ প্রতিবেদনের তথ্যটি স্বীকার করেন।

বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার ও ইটিপির কথা তুলে ধরে, তিনি এই সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, “ইটভাটা বন্ধসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে বায়ু দূষণ কমানোর চেষ্টা চলছে।”

গাজীপুরের বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান বলেন, “সরকার বায়ু দূষণের পরিণতি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। তিনি বায়ু দূষণের সমস্যা মোকাবেলায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাত সরকার, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর নাজনীন মুন্নি, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুস সাকিব খান ও গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া।