ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৫ - ৭:১৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হচ্ছে প্রবারণা পূর্ণিমা

  • আপডেট: Saturday, October 4, 2025 - 7:12 pm

নিজস্ব প্রতিবেদক।

বান্দরবানে শুরু হতে যাচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা বা মাহাঃ ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ। রবিবার (৫ অক্টোবর) থেকে শুরু হবে তিন দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য উৎসব। আত্মশুদ্ধি, অশুভ ত্যাগ ও সত্য-সুন্দরের আরাধনায় পালিত এই উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ের বৌদ্ধপল্লিগুলো এখন উৎসবের রঙে রঙিন।

আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে টানা তিন মাসের বর্ষাব্রত পালন শেষে আসে প্রবারণা পূর্ণিমা। এই তিথিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিজেদের অপরাধ বা পাপ স্বীকার করে আত্মশুদ্ধির পথ অনুসরণ করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় উৎসবকে ঘিরে চলছে নানা আয়োজন।

উৎসবের আগমুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। বাঁশ, বেত, কাগজ আর রঙের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন সাজসজ্জা সামগ্রী ও ঐতিহ্যবাহী পোছোমা (ভূতের প্রতিকৃতি)। এই পোছোমা নাচানো হবে শহরের বিভিন্ন সড়কে।

উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চনুমং মারমা জানান, আগামী রবিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উজানীপাড়া রাজগুরু মহা বৌদ্ধ বিহারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবের উদ্বোধন করবেন বিহারাধ্যক্ষ ড. সুবন্নলাংকারা মহাথেরো ও ভিক্ষু সংঘরা। উদ্বোধনী দিনের মূল অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে মারমা নাটক ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অবঃ) সুপ্রদীপ চাকমা।

পরদিন সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুরাতন রাজবাড়ী প্রাঙ্গণ থেকে বের হবে মঙ্গল রথযাত্রা। সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও চুলামণি জাদির উদ্দেশ্যে রঙিন ফানুস উড়ানো। এরপর বিভিন্ন পাড়ায় অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরির উৎসব।

শেষ দিনে, মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজবাড়ী প্রাঙ্গণ থেকে বের হবে দায়ক-দায়িকা ও ভক্তদের শেষ দিনের মঙ্গল রথযাত্রা। শহরের প্রধান সড়ক ও পাহাড়ি পাড়া প্রদক্ষিণ শেষে সাংগু নদীর উজানীপাড়া খেয়াঘাটে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।

উৎসবকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, “পুরো জেলাজুড়ে নিরাপত্তার চাদর বিস্তৃত থাকবে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবেন, যেন উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।”

ধর্মীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আনন্দে মেতে উঠতে প্রস্তুত বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদ—শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনে।