নিজস্ব প্রতিবেদক।
বান্দরবানের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা আর নেই। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টায় চট্টগ্রামের ইমপেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বিষয়টি তার মেজ ছেলে এমিল তঞ্চঙ্গ্যা নিশ্চিত করেছেন।

১৯৮৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ২০১৪ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। রাজনৈতিক জীবনে সততা, নিষ্ঠা ও নেতৃত্বগুণে তিনি জেলার রাজনীতিতে অনন্য অবস্থান তৈরি করেছিলেন।

১৯৯৬ সালের ১৯ মার্চ নিজ বাড়ির সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং সেই থেকে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতেন। এরপরও তিনি সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রেখে গেছেন। ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বান্দরবান-৩০০ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও পরে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান।

ব্যক্তিজীবনে প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা ছিলেন তিন সন্তানের জনক। বড় ছেলে মিকন তঞ্চঙ্গ্যা বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসে কর্মরত। মেজ ছেলে ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে বৌদ্ধ ভিক্ষু। বড় ছেলে দেশে ফেরার পর রেইচা সাতকমল পাড়ার শ্মশানে তার দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার মৃত্যুতে বান্দরবানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, তার প্রস্থান জেলার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি ছিলেন সবার কাছে অভিভাবকের মতো— আন্তরিক, সহজ-সরল ও স্নেহময় একজন মানুষ।