বাংলাদেশ সীমান্তে আরাকান আর্মির তৎপরতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি উপজাতিদের মিয়ানমারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। প্রশিক্ষণ শেষে তারা পুনরায় সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে চলছে এক ভয়ঙ্কর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। বিশ্বের দুটি প্রভাবশালী দেশ আরাকান আর্মিকে সহযোগিতা করছে রাখাইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নিতে, যার মাধ্যমে বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আরাকান আর্মি বর্তমানে রাখাইনের প্রায় ২৭১ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের শক্তি এখন প্রায় ৪৫ হাজার, যার মধ্যে ১৫ হাজার রাখাইন ও চিন প্রদেশে অবস্থান করছে। সীমান্তে তাদের অবাধ চলাচল বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।
বান্দরবানের থানচি, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে আরাকান আর্মির সদস্যদের যাতায়াত বেড়েছে। স্থানীয় উপজাতি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত মিল থাকায় তারা সহজেই আত্তীকরণ ঘটাচ্ছে। এমনকি কিছু সদস্য স্থানীয় নারীদের বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে।
আরাকান আর্মি সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র, মাদক ও মানবপাচার চালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে তারা ইয়াবা ও অস্ত্র পাচারও করছে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ৪০০-৫০০ বাংলাদেশি উপজাতি নাগরিক বর্তমানে মিয়ানমারে আরাকান আর্মির সদস্য হিসেবে কাজ করছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব কার্যক্রম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও সমন্বিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি।