ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৫ - ৭:৪৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

  • আপডেট: Monday, December 22, 2025 - 5:52 pm

নিজস্ব প্রতিবেদক।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ৪৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সোমবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের বোট ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, এনডিসি। এছাড়া বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ ও শেয়ারহোল্ডারগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে জানানো হয়, আলোচ্য অর্থবছরে বিএসসির পরিচালন আয় ছিল ৫৯০.৯৮ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় হয়েছে ২০৭.৩০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৭৯৮.২৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে পরিচালন ব্যয় ছিল ২৮৯.৯২ কোটি টাকা এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় হয়েছে ১২৬.৪৫ কোটি টাকা। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ৪১৬.২৭ কোটি টাকা। কর সমন্বয়ের পর ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বিএসসির নীট মুনাফা হয়েছে ৩০৬.৫৬ কোটি টাকা, যা সংস্থাটির ৫৪ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এর আগে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বিএসসির মোট আয় ছিল ৫৯৬.১৮ কোটি টাকা এবং ব্যয় ছিল ৩১১.৫৯ কোটি টাকা। ওই অর্থবছরে কর পরবর্তী নীট মুনাফা ছিল ২৪৯.৬৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বিএসসির নীট আয় বেড়েছে প্রায় ৫৬.৮৭ কোটি টাকা।

সভায় বিএসসি পরিচালনা পর্ষদ ২০২৪–২৫ অর্থবছরের নীট মুনাফা থেকে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ ডিভিডেন্ট) প্রদানের সুপারিশ করে। নিজস্ব অর্থায়নে নতুন জাহাজ ক্রয়ের পরিকল্পনার কারণে গত বছরের সমপরিমাণ লভ্যাংশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। ভবিষ্যতে লাভের ধারা অব্যাহত থাকলে লভ্যাংশের হার আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

নিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বিএসসির মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩,৫৮২.৯২ কোটি টাকা এবং মোট বহিঃদেন ১,৯৮৩.৭৭ কোটি টাকা।

জনবল পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়, বিএসসির শোর এষ্টাব্লিশমেন্টে অনুমোদিত জনবল ১,৫২১ জন। ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে অফিসে কর্মরত ছিলেন মোট ২২৫ জন এবং জাহাজে কর্মরত ছিলেন ১৪৭ জন কর্মকর্তা ও নাবিক।

সভায় উন্নয়ন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে জানানো হয়, সরকারের দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতায় বিএসসি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় বহরে নতুন বাণিজ্যিক জাহাজ সংযোজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় ৬টি নতুন জাহাজ ক্রয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে ৫টি জাহাজ বিএসসির বহরে রয়েছে।

এছাড়া সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ অর্জনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি জাহাজ ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে এবং অপরটি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে সরবরাহের কথা রয়েছে।

সরকারি ও নিজস্ব অর্থায়নে নতুন ট্যাংকার ও বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ ক্রয়ের পাশাপাশি জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রুড অয়েল মাদার ট্যাংকার ও মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কন্টেইনার পরিবহন খাতে অংশগ্রহণ বাড়াতে ১২টি নতুন কন্টেইনার জাহাজ অর্জনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।