ইসমাইল ইমন,চট্টগ্রাম।।
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও অনারম্ভন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের বার্ষিক বনভোজন ও মিলনমেলা চট্টগ্রামের কাট্টলীস্থ নিরিবিলি পর্যটন পার্ক’র নিরুপমা রিসোর্টস এ অনুষ্ঠিত হয়। ৩১ ডিসেম্বর (রবিবার) ২০২৩ সালের শেষ দিনে ফোরামের ৮২ জন সাংবাদিক, রিপোর্টার নারী ও পুরুষ এ আনন্দ আয়োজনে অংশ নেন।
ফোরামের সভাপতি কাজী আবুল মনসুরের নেতৃত্বে ফোরামের এ আয়োজনটি ছিল একটি ব্যাতিক্রমধর্মী আয়োজন। বাঙ্গালী ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে মাটির বাসনে খাওয়াসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও ছিল চট্টগ্রামের নানা ঐতিহ্য। দিনভর এ আয়োজনে ‘টিআইবি পুরস্কার’ পাওয়ায় একুশে পত্রিকার সাংবাদিক ফোরাম সদস্য শরীফুল ইসলাম রুকনকে অভিনন্দন ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অভ্যর্থনা কমিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের রজনীগন্ধা ফুলের স্টিক ও নাস্তার প্যাকেট তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর শুরু হয় ফেলোশিপ আড্ডা, আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। আলোচনা সভায় ফোরাম সভাপতি ও প্রতিদিনের সংবাদের ডেপুটি এডিটর কাজী আবুল মনসুর, সহ সভাপতি সি-প্লাসের সম্পাদক আলমগীর অপু, সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান, সহ-সম্পাদক গোলাম মাওলা মুরাদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এটিএন নিউজের মনিরুল পারভেজ, ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুল্লাহ চৌধুরী, সমাজসেবা সম্পাদক ও বনভোজন কমিটির আহবায়ক বাংলা টিভির ব্যুরো প্রধান লোকমান চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের নির্বাহী সদস্য ও ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আইয়ুব আলী, ফোরামের নির্বাহী সদস্য মোহনা টিভির ব্যুরো প্রধান আলী আহমেদ শাহিন, সিনিয়র সাংবাদিক জুবায়ের সিদ্দিকী, রেজিস্ট্রেশন কমিটির আহবায়ক সিনিয়র সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানা, অভ্যর্থনা কমিটির আহবায়ক নুর উদ্দিন সাগর, সদস্য রাজিব চক্রবর্তি, মুকুল মাহি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতি কাজী আবুল মনসুর তার বক্তৃতায় বলেন, অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরাম এ পর্যায়ে এসেছে। শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের কলেবর বাড়ছে। প্রতি বছর আনন্দ আয়োজনের আয়োজন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সারা বছর ব্যস্ত থাকেন। বছরের একটা দিন ফোরামের সদস্যরা এভাবে আনন্দে মেতে উঠবে।
তিনি বলেন, রিপোর্টারদের পেশাগত উন্নয়নের লক্ষে ফোরাম সাংবাদিকদের কর্মশালাসহ নানা আয়োজন করে হবে। একই সাথে চট্টগ্রামের ভাষা ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কাজ করে যাবে। বর্তমানে বিশ্বে ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকতা বাড়ছে উল্লেখ করে সভাপতি বলেন, এখন ডিজিটাল প্লাটফর্মের যুগ। বিশ্বে সাংবাদিকতার উপর বড় বড় অনেক পুরস্কার ফ্রী-ল্যান্স সাংবাদিকরা পান। সাংবাদিকতার গন্ডী এখন অনেক বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে গেছে। এটি এখন আর প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তিনি সাংবাদিকদের তথ্যবহুল বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার উপর আরো জোর দিতে বলেন।
এ মিলনমেলায় টিআইবি পুরস্কার প্রাপ্ত সাংবাদিক শরীফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরাম আজ আমাকে যে সম্মান দেখালো তাতে আমার লেখালেখির উৎসাহ আরো বেড়ে যাবে। ফোরামের সভাপতি কাজী আবুল মনসুরের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে সুদুর গ্রাম থেকে এনে হাতে কলমে সাংবাদিকতা করতে সাহস জুগিয়েছেন। আমাকে আলোকিত বাংলাদেশ ও প্রতিদিনের সংবাদে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে আমি এতদুর আসতে পেরেছি। আজকে টিআইবি’ পুরস্কার প্রাপ্তির পেছনে ওনার অবদান আমি কোনদিন ভুলব না।
ফোরামের সাধারন সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরাম চট্টগ্রামসহ সারা দেশে জায়গা করে নিচ্ছে। সভাপতি কাজী আবুল মনসুর চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের আইকন। তিনি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ওনার হাত ধরে অনেকেই সাংবাদিকতা জগতে এসেছে। ফোরাম গঠন করার পর থেকে নানা সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সব সমস্যাকে দুরে ঠেলে ফোরাম এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাথে ফোরাম য়ৌথভাবে কাজ করবে। সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়নের দিকে ফোরাম নজর দেবে।
আয়োজন কমিটির আহবায়ক লোকমান চৌধুরী বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ আয়োজনটি করতে হয়েছে। হয়ত নানা ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। তিনি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে সবকিছু দেখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।
ধন্যবাদ বক্তব্যে সাংবাদিক আলমগীর অপু বলেন, যারা এ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায়। ফোরামের জন্য পার্ক কমিটি একদিনের জন্য আমাদের ছেড়ে দিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তিনি পার্কের ব্যবস্থাপনা কমিটি, আয়োজক কমিটি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আসা শিল্পীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। আগামীতে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বড় পরিসরে বনভোজন ও মিলন মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের নির্বাহী সদস্য, আমাদের নতুন সময়’র চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ ও বনভোজন কমিটির সদস্য সচিব কামাল পারভেজ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা শেষে দুপুরের প্রীতিভোজ পরবর্তী মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সিআরএফ’র সকল সদস্যদেরকে সিআরএফ’র নির্বাহী সদস্য ও মোহনা টিভি’র চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ আলী আহমেদ শাহিনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।