ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ - ১০:১৫ অপরাহ্ন

বরিশালে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবরোধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত 

  • আপডেট: Friday, September 15, 2023 - 3:50 pm
বরিশাল থেকে পারভেজঃ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈশ্বিক কর্মূচির অংশ হিসেবে, বরিশালে জলবায়ু পরিবর্তন অবরোধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উন্নয়ন সংগঠন আভাসের সহযোগীতায় এলায়েন্স ফর ইয়ূথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এওয়াইডি এর আয়োজনে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ততার মাত্রা বিবেচনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবীতে পৃথিবীর প্রায় ১৫০টি দেশের সাথে সংহতি জানিয়ে, ১৫ ই সেপ্টেম্বর  শুক্রবার  সকাল ৯ ঘটিকার সময় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সড়ক অবরোধ করে বরিশালের ৪১টি সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক সদস্য।
উক্ত  কার্যক্রমে অংশ নেন বীর প্রতীক কে এস এ মহিউদ্দিন মানিক, উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ, আভাসের নিবার্হী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বরিশালে সহকারী পরিচালক প্রিন্স বাহাউদ্দিন তালুকদার, এ্যাড. একে আজাদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় যুব কাউন্সিল বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি ও এওয়াইডি কর্তৃক ক্লাইমেট স্ট্রাইক আয়োজক কমিটির আহবায়ক কিশোর চন্দ্র বালা।
এসময় বক্তরা বলেন উন্নত দেশসমূহের বিলাসী জীবনের দায় আমাদের নিতে হচ্ছে কারন পৃথিবী একটাই আমরা সবাই মানুষ একি আলো-বাতাসে লালিত হই তাই এ বায়ুকে যারা দূষিত করে তাদেরই এর দায় নিতে হবে।
জল ও বায়ুর প্রতিনিয়ত দূষণের ফলাফল কতটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে তা ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। অদূর ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে এখনি সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পৃথিবী হতে পারে জীবনের অস্তিত্ব শূন্য। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো প্যারিস চুক্তির শর্ত না মেনে অতিরিক্ত কার্বন নিঃস্বরণ করছে সাথে গ্রীন হাউজ ইফেক্ট ও বন উজার করার মত আত্মঘাতী ঘটনাগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম কারন হিসেবে পরিনত হয়েছে। উত্তপ্ত পৃথিবীতে বরফ গলে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ফলে নদীতে লবনাক্ততা ছড়িয়ে পরছে। মিঠা পানির জলজ জীবন যেমন হুমকির মুখে তেমনি চর্ম রোগ সহ নানান সংক্রমন ব্যাধিরও সম্ভাবনা লক্ষ্যনীয়। ক্ষতিকর গ্যাস ও অতিরিক্ত কার্বন বাতাসে মিশে রায়ুমন্ডলের ক্ষতির করছে ফলে প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ নানান মহামারীও ইতোমধ্যে দেখা দিয়েছে। অনাবৃষ্টি ও খরা, সুপেয় পানির সংকট , ভূর্গস্থ পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষি সহ প্রাণির জীবন ধারণের অতিব প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানির সংকট ক্রমাগত ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে।
ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনার যেমন বিকল্প নেই তেমনি বিশ্ব নেতাদের থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র হিসেবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়েও থাকতে হবে সোচ্চার । বিশ্বের উচ্চ আয়ের দেশ সমূহ সবচাইতে বেশি কার্বন নিঃস্বরণ করছে । এক গবেষণায় বলা হয়েছে প্রায় ৪০% কার্বণ নি:স্বরণ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এরপর প্রায় ২২% যুক্তরাষ্ট্র এছাড়া চীন, রাশিয়া, ইউরেশিয়া, জাপান, ভারত ও অন্যান্য দেশ সমূহ ১-৯% পর্যন্ত কার্বন নিঃস্বরণ করছে।
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হবে এবং শতাব্দির শেষের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখা হবে , অথচ যুক্তরাজ্যের মেট অফিসের দীর্ঘকালীন আবহাওয়া পূর্বাভাসের প্রধান অ্যাডাম স্কেইফ বলেছেন, ২০২৭ সালের মধ্যে পৃতিবীর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উন্নিত হবার সম্ভাবনা ৬৬% ।
বাংলাদেশ তথা উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে বরিশালের নদীতে লবনাক্ততা, নদী ভাঙ্গন, ডায়রিয়া ও চর্ম রোগের প্রাদুর্ভাব, কৃষি জমিতে একবারের বেশি ফসল না ফলা, সুপেয় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া সহ নানান সংকট দেখা দিয়েছে। উপরন্তু সড়ক নির্মান সহ নানান উন্নয়ন প্রকল্পের কারনে কাটা হচ্ছে শতবর্ষী নানান প্রজাতির গাছ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কেবল একটি বা দুটি দিকে প্রভাব ফেলবে এমন নয় পুরো সৃষ্টির প্রায় সকল ক্ষেত্র- জীবন, জীবিকা, উন্নয়ন, প্রাকৃতিক পরিবেশ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, ভূ‚-প্রকৃতি এমনকি সৌর জগতে পৃথিবীর অবস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয়ভাবে বৃক্ষরোপণ, নিরাপদ বজ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিকের ব্যবহারে সচেতনতা, নদী দূষণ রোধ, বন উজার বন্ধ করা, উন্নয়ন কর্মকান্ডে সবুজায়ন নীতি প্রনয়ন করা । বৈশ্বিকভাবে উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে কাবর্ন নিঃস্বরণে নিবৃত্ত করা ও ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ নিন্মআয়ের/স্বল্পন্নোত দেশগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে উৎসাহী করতে জাতিসংঘ সহ সকল দাতা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সম্মিলিত আওয়াজ তুলতেই হবে- “WE DO NOT HAVE TIME”.