প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের শর্ত মেনেই নিতে হবে কম্বোডিয়া গামী শ্রমিকদের ছাড়পত্র
মো: খায়রুল আলম খান: কম্বোডিয়াগামী শ্রমিকদের ই ভিসার (বিজনেস) বর্হিগমন ছাড়পত্র প্রদান করার আগে রিক্রুটিং এজেন্সীর মালিকদের বেশকিছু শর্ত মানার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
১৪ আগষ্ট প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয়ের (কর্মসংস্থাণ শাখা-১) সিনিয়র সহকারী সচিব শিমুল কুমার সাহা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম এর কাছে পাঠানো হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাংকক (শ্রম কল্যাণ উইং) থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ই-টাইপ ভিসায় কম্বোডিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শর্তাবলীর আওতায় বর্হিগমন ছাড়পত্র প্রদান করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
শর্তের মধ্যে বর্হিগমনের ৩ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সী কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট বিএমইটিতে জমা দেয়া, বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়ায় কর্মী প্রেরনের ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সীকে অবশ্যই বাংলাদেশ এবং কম্বোডিয়া উভয় দেশের বিধিবদ্ধ আইন, বিধি বিধান অনুসরন করা, বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ ও অভিবাসী আইন ২০১৩ এর ১৯ (৩) ধারা অনুযায়ী রিক্রুটিং এজেন্সীকে বিএমইটির চলমান ডাটাবেজ থেকে কর্মী নির্বাচন করা, এক্ষেত্রে বিএমইটি কর্তৃক জারিকৃত প্রসেস ফ্লো চার্জ অনুসরন করার কথা বলা হয়েছে।
শর্তাবলীর মধ্যে আরো যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে, তারমধ্যে কর্মী কম্বোডিয়ায় পৌছানোর পর রিক্রুটিং এজেন্সী প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়, বিএমইটি এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাংকক (শ্রম কল্যাণ উইং) থাইল্যান্ড বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করবে। বর্হিগমন ছাড়পত্র প্রদানের পূর্বে বিএমইটিতে চাহিদাপত্র/ক্ষমতাপত্র ও দক্ষতার সনদপত্রসহ অন্যান্য মূল কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। বিএমইটি প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি ও কাগজপত্র যাচাইপূর্বক ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড বা স্মার্ট কার্ড প্রদান করবে।
শর্ত অনুযায়ী কম্বোডিয়া প্রান্তের সকল খরচ (লেভি, বিমানভাড়া, ইত্যাদি) সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী বহন করবেন। কর্মীর ভিসা এবং ফ্লাইট নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে রিক্রুটিং এজেন্সী কর্তৃক অভিবাসন ব্যয় বাবদ নির্ধারিত অর্থ চেক/ব্যাংক ড্রাফট, পে অর্ডার এর মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। যার প্রমানপত্র মহাপরিচালক, বিএমইটি বরাবর উপস্থাপন করতে হবে। চুক্তিপত্রের কোন শর্ত লংঘন হবে না, অনুমোদিত কর্মীরা উক্ত কোম্পানীতে অবশ্যই চাকুরী পাবেন এবং প্রত্যেক কর্মীকে প্রস্তাবিত বেতন-ভাতা-আবাসন ও অন্যান্য সুযাগ সুবিধা দেয়া হবে এবং কোন ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সীকে কর্মীর থাকা খাওয়ার খরচ ও প্রত্যাবর্তন ব্যয়সহ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকবে মর্মে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে (অঙ্গীকারনামা) দাখিল করতে হবে। শর্তের মধ্যে কম্বোডিয়ায় যাওয়ার পর কর্মী কাজে যোগদান করার ই-টাইপ (বিজনেস) ভিসা এক্সটেনশন এবং কর্মীদের নিয়মিত বেতন পাওয়ার প্রতিবেদন জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ব্যুরো, বাংলাদেশ দূতাবাস থাইল্যান্ড এর শ্রম কল্যান উইং এ দাখিল করতে হবে এবং রিক্রুটিং এজেন্সী এবিষয়ে ১৪ দিনের মধ্যে মন্ত্রনালয়কে অবহিত করবে। এছাড়াও প্রতি ফ্লাইটে রিক্রুটিং এজেন্সীর একজন প্রতিনিধি কর্মীদের সাথে কম্বোডিয়া যাবেন অথবা বিমানবন্দরে কর্মীদের গ্রহণ করার জন্য একজন প্রতিনিধি অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন বলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয় থেকে বিএমইটির ডিজির কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে।
কম্বোডিয়ায় কর্মী প্রেরণে বর্হিগমনের শর্তাবলী প্রসঙ্গে জানতে শুক্রবার (২৫ আগষ্ট) জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শহিদুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিএমইটি’র একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে গনমাধ্যমকে বলেছেন, কম্বোডিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং এজেন্সীগুলো ছাড়পত্র নিতে বেশকিছু ডকুমেন্ট ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর বর্হিগমন ছাড়পত্র দেবো।