ঢাকা | অক্টোবর ২০, ২০২৫ - ৯:৫৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম

প্রথাগত রীতি নয়, রাষ্ট্রীয় বিচার চাই; কাপ্তাই ধর্ষণ ঘটনায় ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ

  • আপডেট: Monday, October 20, 2025 - 7:09 pm

রাঙামাটি প্রতিনিধি।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় স্বজাতি কর্তৃক এক প্রতিবন্ধী মারমা নারীকে গণধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও স্থানীয় প্রথাগত বিচারের নামে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, ৩৫ কাঠুরিয়া স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন, পিসিএনপি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন, কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ইউনিয়নের চংড়াছড়ি মুখ এলাকায় স্বজাতি তিন যুবকের বিরুদ্ধে এক প্রতিবন্ধী মারমা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধারাবাহিক যৌন নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

অভিযুক্তরা হলেন অনুচিং মারমা (৫০), কালা মারমা (৫৫) ও মং উ মারমা (৩৫)। এ ঘটনায় গত ১৭ অক্টোবর স্থানীয় কার্বারীদের মাধ্যমে প্রথাগত রীতিতে একটি সামাজিক বিচার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিন অভিযুক্তকে ভুক্তভোগীর জন্য তিন লাখ টাকা ও সমাজের নামে একটি শূকর কেনার জন্য অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অবিশ্বাস্য হলেও, একই বিচারে ভিকটিমকেও “সমাজের নিয়ম ভঙ্গের” দায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বক্তারা বলেন, এ ধরনের প্রথাগত বিচার কখনোই ন্যায়বিচার হতে পারে না। পাহাড়ে প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল জেএসএসের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভুক্তভোগী পরিবার আতঙ্কের কারণে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না। এমনকি সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে ভিকটিমকে উদ্ধার করাও সম্ভব হয়নি।

পিসিসিপি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনায় পাহাড়ে নারী নির্যাতনের যে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে, তা সমাজের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।”

সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “সামাজিক বিচারের নামে অপরাধীদের অর্থদণ্ড দিয়ে দায়মুক্তি দেওয়া বিচার নয়, বরং অবিচার। পাহাড়ে মানবাধিকারের প্রশ্নটি অনেক সময় রাজনীতির ছায়ায় চাপা পড়ে যায়।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, এই নৃশংস ঘটনার পরও ইউপিডিএফ, জেএসএস কিংবা কেএনএফসহ কোনো প্রভাবশালী পাহাড়ি সংগঠন কিংবা তথাকথিত মানবাধিকারকর্মী নিন্দা প্রকাশ করেনি। অথচ কোনো বাঙালির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই তারা আন্দোলনে নেমে পড়ে।

বিক্ষোভকারীরা দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ও ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।