পিসিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত: সভাপতি কাজী মজিবর রহমান ও মহাসচিব মোঃ শাব্বির আহমেদের দায়িত্ব গ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।
পেশাজীবী সংগঠন, রাজনৈতিক অঙ্গন কিংবা সামাজিক সংগঠন যেখানেই গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং স্বচ্ছ নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া বজায় থাকে, সেখানেই সংগঠন এগিয়ে যায় দায়িত্বশীলতার দিকে। সেই ধারাবাহিকতায় পিসিএনপি (PCNP) তাদের ২০২৫ সালের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন সম্পন্ন করেছে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের অক্সিজেনস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে সভাপতি পদে কাজী মজিবর রহমান এবং মহাসচিব পদে মোঃ শাব্বির আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ায় সংগঠনটির ভেতরে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
পিসিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান রেজাউল করিম এবং অধ্যক্ষ আবু তাহের যথাযথ দায়িত্ব পালন করে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করেন। তাদের তত্ত্বাবধানে স্থায়ী কমিটির ২৫ জন ভোটারের মধ্যে ১৭ জন সদস্য সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা মনে করেন, এ ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে পিসিএনপিকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করবে।
সভাপতি পদে কাজী মজিবর রহমান এককভাবে সর্বাধিক ভোট পেয়ে ২য় বারের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনটির নীতি ও দিকনির্দেশনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। তার সততা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাই তাকে ২য় বারের জন্য সভাপতি হিসেবে সদস্যদের প্রথম পছন্দে পরিণত করেছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সদস্যরা মনে করেন, তার নেতৃত্বে পিসিএনপি আগামী দিনে আরও সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করবে। বিশেষ করে সংগঠন পুনর্গঠন, সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি নতুন মাত্রা যোগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মহাসচিব পদে ছিল ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ শাব্বির আহমেদ, আবদুল মজিদ ও লিগ্যাল এইড কমিটির সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তালুকদার। তিনজন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহাসচিব পদে নির্বাচন ছিল বেশ প্রতিযোগীতামূলক। সদস্যদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হন মোঃ শাব্বির আহমেদ এবং এক সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে তিনি বিজয়ী হন। তার প্রাপ্ত ভোটই প্রমাণ করে যে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তার ওপর আস্থাশীল। সাংগঠনিক দক্ষতা, তথ্যভিত্তিক কাজ এবং তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা তাকে এই পদে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
নির্বাচনের পর উপস্থিত সকল সদস্যদের স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশন গৃহীত হয়, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে অভিষেক করবেন। এটি সংগঠনের কাঠামোকে দ্রুত সুসংগঠিত করতে সহায়তা করবে। সভাপতি ও মহাসচিব এখন বাকি পদগুলোতে যোগ্য ও নিষ্ঠাবান সদস্য নিয়োগ দিবেন।
নতুন সভাপতি ও মহাসচিব দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পিসিএনপির সামনে নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ উন্মোচিত হয়েছে। সদস্যরা আশা করছেন, তারা সংগঠনের তুলনামূলক দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করে উন্নয়নের পদক্ষেপ নেবেন,অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিরসন করবেন, সদস্যদের মাঝে ঐক্য দৃঢ় করবেন, জনসম্পৃক্ত কার্যক্রম বাড়াবেন, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের সুনাম বৃদ্ধি করবেন।
নতুন এই নেতৃত্ব সংগঠনের মূল আদর্শ বজায় রেখে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও গণমুখী পিসিএনপি গড়ে তুলবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সকল সদস্য।
পিসিএনপির সাম্প্রতিক নির্বাচন শুধুমাত্র নেতৃত্ব পরিবর্তনেরই ঘটনা নয়; এটি সংগঠনের গণতান্ত্রিক চেতনার প্রকাশ। কাজী মজিবর রহমান সভাপতি এবং সাব্বির আহমেদ মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ায় সংগঠন নতুন গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সুসংগঠিত প্রক্রিয়ায়, স্বচ্ছ নির্বাচন ও সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পিসিএনপিকে আরও শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করেছে। নতুন নেতৃত্ব এই আস্থা ও প্রত্যাশাকে সমুন্নত রেখে সংগঠনকে আগামী দিনগুলোতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে এটাই সদস্যদের দৃঢ় বিশ্বাস।











