ঢাকা | এপ্রিল ৫, ২০২৫ - ১২:৩১ অপরাহ্ন

শিরোনাম

পাহাড়ে নতুন নতুন বিচ্ছিন্নতাবাদী গজিয়ে ওঠার কারণ কী? এর দায় কার?

  • আপডেট: Wednesday, July 26, 2023 - 4:31 pm

মোঃ শাহজালাল
বাবা যদি সকল সন্তানদের সমান অধিকার এবং সম-ভোগের অধিকার না দেয় তার মাঝে ২/১ টি সন্তান বিচ্ছিন্ন হয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে এটাই সাভাবিক। জেএসএস শান্তিচুক্তি করে সরকারের সাথে যে বিশ্বাসঘাতকাতা করেছে ঠিক সেইরকম’ই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে পাহাড়ের অন্যান্য সংখ্যালঘু ক্ষুদ-নৃ গোষ্ঠী গুলোর সাথে। যার ফলে তৈরি হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী। চাঁদার টাকা নিয়ে ভাগাভাগি চাকরি,কোটা,শিক্ষার সুবিধা,রাজনীতির সুবিধা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এলাকা গুলোর মাঝে যত্রতত্র সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর হেডম্যান নিয়োগ করা সহ বিভিন্ন কারণে অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী গুলো বিচ্ছিন্নভাবে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে এবং দেশ ভাগের ষড়যন্ত্র করছে। পাহাড়ে এক একটি জাতির বিচারব্যবস্থা,রীতি-প্রথা,চাহিদা এক এক রকম। সুতরাং শান্তিচুক্তির ফলে যদি একটি পক্ষের দিকে সকল সুযোগ সুবিধা চলে যায় তাহলে অন্য পক্ষ গুলো বঞ্চিত হবে।

পার্বত্য অঞ্চলের চলমান সহিংসতার দায় কেএনএফ, জেএসএস, ইউপিডিএফ, এমএলপি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সবাই দায়ী। এই পর্যন্ত যতগুলো সশস্ত্র সংগঠন গজিয়েছে তার পিছনে ইন্ধন দিয়েছে জেএসএস, হিল ট্র্যাক্স কাউন্সিল সহ বিদেশী এনজিও গুলো। বিদেশী এনজিও গুলোর বাহার দেখে মনে হয়,পাহাড়ের মাটি মানেই তাদের জন্য উর্বর টাকার খনি।

ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী গুলোর প্রতিনিধি হয়ে সরকারের সাথে শান্তিচুক্তি করেছিল জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)। তারা চুক্তির মাধ্যমে সরকার কে যে দাবী গুলো পেশ করেছিল সেগুলো সব’ই ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর সকল জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং বাঙ্গালিদের জন্য ছিল বিষফোঁড়া ও ফাঁদ। অস্ত্র জমাদানের শর্তে সরকারও সেই দাবী গুলো মেনে নিয়েছিল,তবে জেএসএস বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল সরকারের সাথে এবং অন্যান্য পাহাড়ি সংখ্যালঘু (ম্রো,বম,খিয়াং) ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী গুলোর সাথে। শান্তিচুক্তির পরেও তাদের অস্ত্রের ঝনঝনানি, চাঁদাবাজি,গুম-খুন,হত্যা এবং একক আধিপত্য কমে নি। বরং দ্বিগুণ বেড়েছে।

পাহাড়ের সংখ্যলঘু এবং বৃহৎ বাঙ্গালি জাতি গুলোকে এক কোণে রেখে একাই সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে শান্তিচুক্তি করা জেএসএস। জেএসএস এর প্রধান সন্ত লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বানানো হয়েছে,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কোটা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থায়ী বাসিনন্দা,সনদ,চাকরি শিক্ষাক্ষাতে কোটা, শিক্ষাবৃত্তি হতে শুরু করে সব জাগায়’ই জেএসএস অর্থ্যাৎ গুটিকয়েক জাতির একক আধিপত্য। এমন কি শান্তিচুক্তির মাধ্যমে ৫২% বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীকেও সব জায়গা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে জনসংহতি সমিতি এবং হিল ট্র্যাক্স কাউন্সিল ।

আপনি কী ভাবছেন কেএনএফ’র সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাঝে জেএসএস তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।জেএসএস এখনো পাহাড়ের প্রতিটা পয়েন্টে চাঁদাবাজি চলমান রেখেছে। হুমকি,ভয়-ভীতি,খুন,অস্ত্র মজুদ বাড়িয়ে চলেছে। তবে অস্ত্র হাতে নিয়ে অধিকারের বুলি আওড়ানো বোকামি ছাড়া কিছুই না।

শান্তিচুক্তি হচ্ছে বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীর জন্য এক বিশাল বিষফোঁড়া। এই চুক্তি কখনো দীর্ঘস্থায়ী শান্তি বয়ে আনবে না পাহাড়ে। কারণ এটি বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক,এবং প্রতিটি জাতির রীতি-প্রথা ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় পাহাড়ে আধিকার আদায়ের লড়াইয়ের নামে মাঝেমধ্যে ২/১ টি বিচ্ছিন্নতাবাদী গজিয়ে উঠবে। যার ফলে হুমকির সম্মুখীন হবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও শান্তি।

 

লেখকঃ দপ্তর সম্পাদক – পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

Proudly Designed by: Softs Cloud