ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ৬:১৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

পাকুয়াখালী গণহত্যার বিচারসহ ভুক্তভোগী পরিবারকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবেঃ কাজী মজিব

  • আপডেট: Saturday, September 9, 2023 - 6:42 pm

কামাল হোসেনঃ পার্বত্য চট্রগ্রাম নাগরিক পরিষদের (পিসিএনপি) চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান বলেছেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙালি গণহত্যার কলঙ্ক হত্যায়ের মধ্যে কাঠুরিয়া গণহত্যা অন্যতম। যুগ যুগ ধরে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস’র সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত, নারকীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে পাবর্ত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর)  পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন। যা পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালিত হয়।

আজ শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লংগদু উপজেলা সদরে শোক র‌্যালি করে প্রধান সড়ক ঘুরে এসে মাঠে পাকুয়াখালীতে নিহত গণ কবরের সামনে দোয়া, মুনাজাত ও শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা গণহত্যার দিবস আসলেই তাদের মনে করি। কিন্তু তাদের একটি পরিবার আছে। তাদের কখনো খোঁজ নিয়েছি? তাদের এই হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও চাকরি সরকারের কাছে দাবী করি।

তিনি আরও বলেন, কাঠুরিয়া গণহত্যার মধ্যে দিয়েই খান্ত হয়নি অসন্তুুষ্টর লারমা বরং যুগ যুগ ধরে বাঙালিদের উপর বর্বর নির্যাতনসহ বিভিন্ন সময় গণহত্যা চালিয়ে গিয়েছে। আর এসব সন্তু লারমা তাঁর জে এস এস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে করিয়েছে।

১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের ওপর নিমর্ম নিযার্তনের পর হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম জিংঘাসার স্বরূপ উন্মোচন করে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যার দিন। এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তি বাহিনী। তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।

বক্তারা বলেন, মানবাধিকার এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সকল বাঙালি গণহত্যাকান্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সম্প্রীতি রক্ষায় সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ও দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসা সহ তাদের সংগঠনের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও  এর অঙ্গ সংগঠন পিসিসিপি,পিসিএমপি রাঙ্গামাটির – লংগদু, ঢাকা,চট্টগ্রামে প্রতিবাদ সমাবেশ ও আলোচনাসভার আয়োজন করেন।

ঢাকা শিশু কল্যাণ পরিষদের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা পিসিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি  মনিরুজ্জামান মনির, আরও উপস্থিত ছিলেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি  শেখ আহমেদ রাজু, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর পিসিএনপি সভাপতি আবদুল হামিদ রানা, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আলম খান প্রমুখ।

খাগড়াছড়ির মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডালিম, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমা আহমেদ মৌ,জেলা পিসিসিপি সভাপতি সুমন আহমেদ,  পিসিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম মাসুদ, হেলাল উদ্দিন, মাটিরাংগা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ রবিউল হোসেন প্রমূখ।