ঢাকা | জানুয়ারী ৩০, ২০২৫ - ৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করায় রিপোর্ট ছুড়ে ফেললেন চিকিৎসক

  • আপডেট: Tuesday, January 28, 2025 - 6:22 pm

শরীয়তপুর প্রতিনিধি।। চিকিৎসকের পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করায় রোগীর রিপোর্টসহ ব্যবস্থাপত্র টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে সদর উপজেলার দড়ির হাওলা গ্রামের বাসিন্দা এসকান চৌকিদার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসা চলাকালীন, কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস রোগীর কিছু পরীক্ষার নির্দেশ দেন এবং একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে সেগুলো করার পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনরা ওই ক্লিনিকে না গিয়ে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষাগুলো করান। পরবর্তীতে সেই রিপোর্টগুলো নিয়ে আসলে কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস রিপোর্টগুলো দেখবেন না বলে সেগুলো ছুড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় রোগী ও তাদের স্বজনরা।

এ বিষয়ে এসকান চৌকিদারের ছেলে হেদায়েত বলেন, “আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবার চিকিৎসার জন্য কিছু পরীক্ষার নির্দেশ দেন। তবে তিনি পরীক্ষাগুলো একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক থেকে করানোর পরামর্শ দেন।

আমরা আর্থিক সমস্যার কারণে ওই ক্লিনিকে না গিয়ে অন্য একটি ক্লিনিকে পরীক্ষাগুলো করাই। কিন্তু রিপোর্ট নিয়ে আসার পর চিকিৎসক সেগুলো দেখতে অস্বীকৃতি জানান এবং আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের এমন আচরণে আমরা খুবই হতাশ ও বিপাকে পড়েছি।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লিখন বলেন, “সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট ক্লিনিকে পরীক্ষার অনুরোধ নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। পরীক্ষাগুলো অন্য কোথাও করালে অনেক সময় চিকিৎসকরা রিপোর্ট গ্রহণ করেন না বা সেগুলো নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র ও সাধারণ রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা চাই, চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে এমন হয়রানি বন্ধ হোক এবং সবার জন্য সঠিক ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হোক।”

এ বিষয়ে সরাসরি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও, গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে ডা. কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন সঠিকভাবে চিকিৎসা দিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আকরাম এলাহি বলেন, “উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। চিকিৎসা সেবায় কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব এবং সেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করব।”