ঢাকা | এপ্রিল ২১, ২০২৫ - ১২:৫৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম

নববর্ষের শোভাযাত্রায় ইয়েন ইয়েনের দেশবিরোধী প্ল্যাকার্ড নেওয়ায় পিসিসিপি’র বিক্ষোভ

  • আপডেট: Monday, April 21, 2025 - 6:53 am

শাহজালাল, রাঙামাটি।। নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের পক্ষে চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করায় এর প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার বেলা এগারো টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।

শহরের কাঠালতলী থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।

পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে ও পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পার্বতঢ চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, রাঙামাটি জেলা প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, সহ- সাধারণ সম্পাদক ও লংগদু উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হাসান, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুল ফেরদৌস বিথী, পিসিসিপি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক ও কলেজ শাখার যুগ্ন আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, পিসিসিপি পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখেও ছাড় পেল না পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ। বাঙালির প্রাণের উৎসবকে হাতিয়ার বানিয়ে আবারও চোখে পড়লো পরিচিত সেই পুরনো প্রোপাগান্ডা। রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে কয়েকজন বামপন্থী ও উগ্রবাদী উপজাতি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিজেদের স্বার্থে বানানো প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাজির হলো ঢাকার রাজপথে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২- উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার একটি অংশে ইয়েন ইয়েন নিজেই একটি প্ল্যাকার্ড নিলেন যেখানে আঁকা রয়েছে বম জনগোষ্ঠীর নারী শিশুরা বন্দী, আসলে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে ইয়েন ইয়েন মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে কোনো নারী শিশুরা বন্দী নয়, বন্দী হলো বান্দরবানে যারা ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত ছিলো ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যায় জড়িত বম-খিয়াংদের নিয়ে গঠিত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট- কেএনএফ এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠন এর সদস্যরা। এখন দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েন কি কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সরাসরি পক্ষ নিয়ে মুক্তি দাবি করছে? যদি তিনি কেএনএফ সন্ত্রাসীদের নিরীহ বানিয়ে মুক্তির দাবি করে থাকে তাহলে সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ইয়েন ইয়েনকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তবে এটি ইয়েন ইয়েন এর একটি নাটক ও ষড়যন্ত্র, যখনি চাকমা আধিপত্য বাদ নিয়ে চারদিকে কথা হচ্ছে তখনি কিছু ষড়যন্ত্রকারীদের প্রেসক্রিপশনে ইয়েন ইয়েন বম প্রীতি দেখানোর নামে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দাবি করছেন।

বক্তারা আরো বলেন, ইয়েন ইয়েন নেতৃত্বে চিহ্নিত কয়েকজন উপজাতি ও বাম সংগঠনের বাঙালি নারী পুরুষ প্ল্যাকার্ড হাতে নেয় সেখানে কোথাও লেখা “আদিবাসীর স্বীকৃতি চাই”, কোথাও “পাহাড়ে সেনাশাসন বন্ধ করো”, আবার কোথাও দেখা গেলো পাহাড়কে ফিলিস্তিনের সঙ্গে তুলনা করার মতো হাস্যকর ও উদ্দেশ্যমূলক দাবি।

প্রশ্ন হলো—এই ছেলেমানুষি আর কতদিন? আর এসব দেখে যারা বাহবা দেয়, তাদেরও জিজ্ঞেস করা উচিত—আপনারা আদতে পাহাড়ের কোন বাস্তবতা বোঝেন?
পাহাড়ে কি সেনা শাসন চলছে? কখনোই না, কারন পার্বত্য উপদেষ্টা চাকমা সম্প্রদায়ের, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চাকমা সম্প্রদায়ের, পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান চাকমা সম্প্রদায়ের, চাকমা সার্কেল চীফ চাকমা সম্প্রদায়ের, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান চাকমা সম্প্রদায়ের,
উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স এর চেয়ারম্যান
চাকমা সম্প্রদায়ের। পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল কিছুর চেয়ার যদি চাকমা সম্প্রদায়ের হাতে থাকে তাহলে সেনা শাসন টা চলছে কোথায়? পাহাড়ে তো চলছে চাকমা শাসন, এখন চাকমা শাসন বন্ধ করার দাবিতে সকলের রাজপথে নামা উচিত।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা হলো সাধারণ একজন চাষী, ব্যবসায়ী বা গৃহিণীকেও বাঁচতে হয় চাঁদাবাজির ভয় নিয়ে। তিন পার্বত্য জেলায় বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে। এই চাঁদাবাজি কারা করে জানেন?
যারা বলছে পাহাড় থেকে সেনা হঠাও, যারা বলছে সেনা শাসন বন্ধ করো, সেই তারাই পাহাড়ে চাঁদাবাজি করছে, সশস্ত্র অবস্থায় ভারী অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।
আপনি যদি পাহাড়ে একটা পোষা মুরগিও বিক্রি করতে চান, আপনাকে পাহাড়ি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে হবে। কলা, হলুদ, সবজি—সবজান্তা সন্ত্রাসীদের নজর এড়ায় না কিছুই। সন্তানদের বিয়েও করতে হলে দিতে হয় চাঁদা, নয়তো আসে হুমকি, কখনো বা অপহরণ।

বক্তারা আরো বলেন, তাদের কাছে “আদিবাসী অধিকার” মানে সাধারণ পাহাড়ির অধিকারের নাম নয়, বরং নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থের ঢাল।
পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়িদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে, সেখানে সরকারের সাথে চুক্তি করেছে উপজাতি পরিচয়ে।
তাদের সব দাবি যখন মেনে নিয়েছে সরকার তখন তাদের হাতে আন্দোলনের নামে পাহাড় অশান্ত করার আর অস্ত্র রইলো না। এখন তাহলে কিভাবে পাহাড়কে অশান্ত করা যায়,? সেই চিন্তা থেকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘ আইএলও কনভেনশন ঘোষণা করার পর থেকে নতুন করে আদিবাসী পরিচয় দাবি করে পাহাড়কে অশান্ত করতে উঠে পড়ে লেগে যায়। এখন পাহাড়ে নতুন করে অশান্ত করার তাদের একটি হাতিয়ার সেটি হচ্ছে অযৌক্তিক ‘আদিবাসী দাবি।’