ঢাকা | ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫ - ৫:৫৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

তীব্র শীতে থমকে যাচ্ছে জনজীবন-শীতার্ত মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের

  • আপডেট: Monday, December 29, 2025 - 3:49 pm

মো. গোলামুর রহমান, লংগদু (রাঙামাটি)।
রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ঘেরা লংগদু উপজেলায় জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। গত কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলে সূর্যের দেখা কিছুটা মিললেও সোমবার সারাদিন রোদের দেখা মেলেনি। দিনভর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারপাশ, আর হিমেল বাতাসে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। তীব্র এই শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার দিনমজুর, কৃষক ও জেলেরা।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) লংগদু উপজেলায় তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এখানকার খেটে খাওয়া মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূর্য না ওঠায় এবং কনকনে ঠান্ডার কারণে সকালে কাজে বের হতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে কাপ্তাই লেকের ওপর নির্ভরশীল জেলেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ঘন কুয়াশায় নৌযান চালানো যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, তেমনি প্রচণ্ড ঠান্ডায় লেকের পানিতে জাল ফেলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক জেলেই গত কয়েকদিন ধরে মাছ ধরতে নামতে পারেননি।
একই চিত্র কৃষি খাতেও। আমন-পরবর্তী কাজ এবং শীতকালীন শাকসবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও হাড়কাঁপানো শীতে মাঠে নামতে পারছেন না কৃষকরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বোরো ধানের চারা ও মৌসুমি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলার জনৈক এক দিনমজুর বলেন, “সকাল থেকে সূর্যের দেখা নাই, তাই আজ কাজে বের হইনি। আমাদের জীবন হলো একদিন অন্যের কাজ করে কিছু টাকা পাই, সে টাকা দিয়ে আবার নিজের চাষাবাদের জন্য সার, বীজ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করি। এত ঠান্ডা থাকলে আমাদের দৈনন্দিন আয়ের চাকা বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়াও এবার লেকের পানিও কমছে না। সব দিকে যেন বিপদ জেঁকে বসছে।”
অপরদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে শিশুরা। তীব্র শীতে শিশুদের নিউমোনিয়া ও বয়স্কদের শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। লংগদু সদর হাসপাতালের তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনের তুলনায় প্রতিনিয়ত ঠান্ডাজনিত রোগী, বিশেষ করে শিশুদের ভর্তি করানো হচ্ছে। গত দিনের চেয়ে আজও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শীত আসলেও এ বছর মনে হচ্ছে টানা কুয়াশা আর শীত জেঁকে বসেছে। শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আবারও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। পাশাপাশি লংগদু জোনের পক্ষ থেকেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম চলমান থাকবে।