টেকনাফে মানবপাচারকারীর আস্তানা থেকে ১৪ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করল বিজিবি

জাগো জনতা অনলাইন।। কক্সবাজার টেকনাফ সদর ইউনিয়নে অপহরণকারীদের আস্তানায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ১৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার (১১ মে) সকালে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবির) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ এপ্রিল গভীর সাগর দিয়ে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে মানব পাচারকালে মোঃ সাইফুল ইসলামসহ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আটক করতে অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি। এ সময় টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে পলাতক পাচারকারীদের নামে ওই দিন টেকনাফ মডেল থানায় মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ওই অভিযানে উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে মানব পাচারকারীদের গ্রেফতারে মেরিন ড্রাইভ সড়ক এবং দমদমিয়া এলাকায় বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের সূত্র ধরে জানা যায়, মানব পাচারকারী চক্রটি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় সম্প্রতি বেশ কিছু বাংলাদেশি নাগরিককে অপহরণ করে গোপনস্থানে জিম্মি করে রেখেছে।
পরে ওই সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার (১০ মে) গভীর রাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) একটি বিশেষ টহলদল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় অভিযান চালায়। বিজিবি কুখ্যাত মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা লেঙ্গুরবিল এলাকার মৃত হাফেজ আহমদের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৩৯)’র গোপন আস্তানায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ১৪ জন অপহৃত বাংলাদেশি নাগরিককে অক্ষত বা জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, চক্রটি দালালদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে টেকনাফে নিয়ে আসে। পরে সুযোগ বুঝে টেকনাফ ও মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থান হতে তাদেরকে অপহরণ করে দুর্গম লুকায়িত স্থানে আটকে রাখে। তারপর থেকেই, অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। এছাড়াও, মুক্তিপণ আদায়ে অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগীদের ওপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনও করেছে। অত্যাচারের এ সকল অমানবিক ভিডিও চিত্র ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণের টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হতো।
কুখ্যাত অপরাধী চক্রটির সদস্যদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের পরিবারের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।