টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৩৪
জাগো জনতা অনলাইন: সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলা টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি হাউসবোট থেকে ৩৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ২৪ জন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র।
গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা ইসলামী ছাত্রশিবিরে যুক্ত বলে পুলিশ ও তাদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন। বাকি তিন শিক্ষার্থী কিশোর। তারা এবার এসএসসি পাস করেছে। তবে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র, তা জানায়নি পুলিশ।
গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা নৌকা ভাড়া করে ‘নাশকতামূলক সভা’ করছিলেন বলে তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন দাবি করেছেন।
আটকের একদিন বাদে সোমবার বিকালে তাদের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
পরে তাহেরপুর আমলি আদালতের নির্বাহী হাকিম মোহাম্মদ ফারহান সাদিক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) খায়রুল কবীর রুমেন।
গ্রেপ্তার বুয়েট শিক্ষার্থীরা হলেন- আফিফ আনোয়ার (২৪), বখতিয়ার নাফিস (২৪), মো. সাইখ সাদিক (২১), ইসমাইল ইবনে আজাদ (২১), সাব্বির আহম্মেদ (২১), তাজিমুর রাফি (২০), মো. সাদ আদনান অপি (২২), মো. শামীম আল রাজি (২০), মো. আব্দুলাহ আল মুকিত (২৩), মো. জায়িম সরকার (২১), হাইছাম বিন মাহবুব (২৫), মাহমুদুর হাসান (২২), খালিদ আম্মার (২১), মো. ফাহাদুল ইসলাম (২৩), তানভির আরাফাত ফাহিম (২১), এ টি এম আবরার মুহতাদী (২১), মো. ফয়সাল হাবিব (২০), আব্দুল বারি (২৪), আনোয়ারুল্লাহ সিদ্দিকী (২৮), মো. বাকি বিল্লাহ (২৮), মাহাদি হাসান (২৩), আলী আম্মার মৌয়াজ (২৫), টি এম তানভির হোসেন (২৬), মো. রাশেদ রায়হান (২৪), সাকিব শাহরিয়ার (২৩), ফায়েজ উস সোয়াইব (২৪), আব্দুর রাফি (২৫), আশ্রাফ আলী (২৫), মো. মাহমুদ হাসান (২৫), মো. এহসানুল হক (২৪), মাঈন উদ্দিন (২৪)।
মামলার বরাত দিয়ে তাহিরপুরের ওসি ইফতেখার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “হাওরে পর্যটকরা মূলত শুক্র ও শনিবার আসেন। এই দুইদিন টাঙ্গুয়ার হাওর মুখর থাকে। কিন্তু এই শিক্ষার্থীর দলটি এসেছে রোববার।
“টাঙ্গুয়ার হাওরে একটি হাউসবোট ভাড়া করে তারা শ্রীপুর এলাকায় চলে যায়। সেখানে হাউসবোটের মধ্যেই রাজনৈতিক ও নাশকতামূলক রাষ্ট্রবিরোধী সভা করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পরে সন্ধ্যায় সবাইকে থানায় নিয়ে আসা হয়।”
ওসি আরও বলেন, “আমরা সবাইকে আলাদা আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা সবাই ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মূলত বেড়ানোর নাম করে এখানে এসে গোপনে নাশকতামূলক সভা করেছে।”
এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় এসআই রাশেদুল কবীর বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
আসামিদের সুনামগঞ্জ জেলা আদালতে আনা হলে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা সেখানে ভিড় করেন। মামলার শুনানিতেও জামায়াতে ইসলামীর র সমর্থক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আইনজীবী আবুল বাশার জানান “গ্রেপ্তারকৃতরা ছাত্রশিবিরের কোন পর্যায়ের নেতা-কর্মী, তা এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাদের জন্য আইনজীবী নিয়োগের ব্যাপারে পরিবার থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।”