জাগো জনতা অনলাইন।। দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা জরুরি বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আরাকান পুরোপুরি আরাকান আর্মির দখলে। তাই দেশের নিরাপত্তার জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে ‘এনগেজমেন্ট’ বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রোহিঙ্গা, রাখাইন ও মিয়ানমারের পরিপ্রেক্ষিত: বাংলাদেশের ঝুঁকি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে নীতি গবেষণা কেন্দ্র।

দিলারা চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হলেও দুই দেশের মধ্যে তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। এ কারণে প্রতিবেশী দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আচরণগুলো অচেনা থেকে গেছে। তাই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ যখন শুরু হয়, তখন বাংলাদেশ সরকার পুরোপুরি অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। এখনো সেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা সংকট আবারও সামনে আনার জন্য অন্তবর্তী সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দিলারা চৌধুরী বলেন, অতীতের সরকার আরাকান আর্মির সঙ্গে ‘এনগেজমেন্ট’ বাড়ানোর চেষ্টা করেনি। বর্তমান সরকার যখন সেই আলাপটি তুলল তখন তাঁদের বিরুদ্ধে করিডর, বন্দর সম্পর্কিত দেশ বিক্রির অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ সুফিউর রহমান। আলোচনায় তিনি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রধান তিনটি বিষয়ে আলোকপাত করেন। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩ সাল থেকে প্রতিবছর দেড় লাখ রোহিঙ্গা দেশে ঢুকেছে। এভাবে চলতে থাকলে দ্রুতই রাখাইন এলাকা রোহিঙ্গাশূন্য হয়ে পড়বে। এতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের উচিত রাখাইনে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে কৃষি ও বাণিজ্যিক সহযোগিতাও বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের কৌশল আলোচনার সময় মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের উচিত অযাচিত হয়ে কোনো ভূরাজনৈতিক খেলায় জড়িত না হওয়া। এতে নতুন করে ঝুঁকি তৈরি হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিসের প্রধান নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসির, গবেষক ও শিক্ষক মাহবুবুল হক ও ডেইলি স্টারের কূটনৈতিক প্রতিবেদক পরিমল পালমা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন নীতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী শাকিল আহমেদ।