জাতিসংঘে ইরানকে সমর্থন দিলো বাংলাদেশ
মো: খায়রুল আলম খানঃ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ইরানের পক্ষে এবার ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে পশ্চিমাদের আনীত এক রেজুলেশনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের ওই কাউন্সিলে দেশভিত্তিক যেকোনও রেজুলেশনে কোনও পক্ষ না নেওয়ার অবস্থান বাংলাদেশ ইতিপূর্বে বজায় রাখলেও, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের অবস্থানের কিছুটা ভিন্ন রুপের পরিবর্তন দেখা যায়। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ঠিক কী বার্তা দিতে চাইছে সেটা খুব একটা স্বচ্ছ নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞজনেরা
গত মঙ্গলবার উত্তর ম্যাসিডোনিয়া, মলডোভা, যুক্তরাজ্য, আইসল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড আনীত রেজুলেশনটির পক্ষে ২৩টি ভোট এবং বিপক্ষে আটটি ভোট পড়ে। এ সময় ১৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, কিউবা, বলিভিয়া, ইরিত্রিয়া, চীন, কাজাখস্থান ও ভিয়েতনাম রেজুলেশনটির বিপক্ষে ভোট দেয়।
আর অন্যদিকে পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের সব সদস্য দেশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশ ভোট দেয়।
নেপাল, ভারত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও আফ্রিকার সদস্য রাষ্ট্রগুলো ভোট দানে বিরত থাকে।
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফোরামে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশভিত্তিক রেজুলেশনের ক্ষেত্রে বিতর্ক না থাকলে অথবা অন্যদেশ কী ভাবলো সেটি নিয়ে মাথা না ঘামালে বাংলাদেশ পক্ষে অথবা বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকে। বড় উদাহরণ হচ্ছে প্যালেস্টাইন ইস্যু যেখানে সবসময় আমরা তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি।’
সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ইরানের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক আছে এমন দেশের তালিকায় রয়েছে ভারত এবং তারা পর্যন্ত ভোটদানে বিরত ছিল অর্থাৎ তারা পশ্চিমা বিশ্বের বিপক্ষে যায়নি বলে জানা যায়।
অন্য এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ইরানকে এই মুহূর্তে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের কোন ধরনের জাতীয় স্বার্থ উদ্ধার হবে সেটিও খুব একটা পরিষ্কার নয়। কারন বাংলাদেশের সবথেকে বড় রফতানি খাত পশ্চিমা বিশ্বে, এই দেশগুলো থেকে আমরা বিনিয়োগও পেয়ে থাকি। এক সিদ্ধান্তের কারণে যে সমস্ত ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিষয়টি অবশ্য সেরকমও নয়। তবে বাংলাদেশের গতিবিধির প্রতি তারা এখন নজরদারি বাড়াবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি রেজুলেশন আনা হয়। এ বছর যদি পশ্চিমারা অনীহা প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশকে ইরানের দিকে ঠেলে দেয়, তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে কয়টি ভোট জোগাড় করা সম্ভব হবে, সেটিও এখন ভাবনার বিষয় হয়ে রইলো।