জমে উঠেছে স্বরূপকাঠির ভাসমান পেয়ারার বাজার
এম কে কামরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার অন্তর্গত স্বরূপকাঠির কীর্তিপাশা খালে অবস্থিত পেয়ারার ভাসমান বাজার। ২০০ বছরেরও বেশি সময় আগে এই ভাসমান বাজারটি শুরু হয়। ঝালকাঠি ও পিরোজপুর সীমারেখায় অবস্থিত ছোট্ট গ্রামের নাম ভীমরুলি। এখানেই চতুর্মুখী ছোট-বড় খালের মোহনায় প্রতিদিন পেয়ারা বেচাকেনা শুরু হয়। এ বাজারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ভিমরুলি। স্থানীয় ব্যক্তিদের মুখে অবশ্য এই বাজারকে উদ্দেশ করে কথা বলার সময় ‘গোইয়ার হাট’ নামটা শোনা যায়।
সাধারণত পেয়ারার মৌসুম শুরু হয় জুলাই মাসে, চলে টানা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পাইকারি বাজারের দেখা পেতে হলে সেখানে যেতে হবে জুলাইয়ের শেষ দিকে। সারি সারি ভাসমান নৌকায় সবুজ-হলুদ পেয়ারার ছড়াছড়ি।
এখানে রয়েছে অসংখ্য পেয়ারার বাগান। চাষিরা সরাসরি বাগান থেকে পেয়ারা এনে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার ডুমুরিয়া, কাপড়কাঠি, কাঁচাবালিয়া, ভীমরুলি, হিমানন্দকাঠি, শতদশকাঠি, রামপুর, মীরাকাঠি, শাওরাকাঠি, জগদীশপুর, আদমকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর, কুরিয়ানা, বংকুরাসহ আরও কিছু গ্রামে প্রায় ২৪ হাজার একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়। নবগ্রাম ইউনিয়নের নবগ্রাম, হিমানন্দকাঠি, দাড়িয়াপুর, সওরাকাঠি ও গাভারামচন্দ্রপুর– এই পাঁচটি গ্রামে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা উৎপাদন হয়। সব মিলিয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলায় বছরে ২৪ থেকে ২৫ হাজার টন পেয়ারা উৎপাদিত হয়, যা কেনাবেচায় প্রায় ৪৬ থেকে ৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়ে থাকে। এখানকার মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পেয়ারা। শত বছর ধরে গ্রামগুলোয় বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করা হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত মোট পেয়ারার প্রায় ৮০ শতাংশই উৎপাদিত হয় এ অঞ্চলে। ২৬টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য এই পেয়ারা বাগানের ওপর নির্ভরশীল।