চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক।। ১২ সপ্তাহের জন্য কর্মবিরতি স্থগিত করেছে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমানের আশ্বাসে তারা কর্মবিরতি স্থগিত করেন। শনিবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয় বলে জানিয়েছেন ফোরামের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ আল আমিন।
এর আগে, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যালের বাগান গেটে মৌন মিছিলে সমবেত হন চিকিৎসকরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মবিরতি স্থগিত করেন তারা।
তবে আগামী ৫ সপ্তাহের মধ্যে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি না এলে আবারও কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তারা জানান, অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের বাসায় আমরা গত রাতে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, চিকিৎসকদের বৈষম্যগুলো যতদ্রুত সম্ভব ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে। সমাধানের প্রথম অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে পদোন্নতি হয়ে যাবে। ঈদের পর আমরা আশা করছি দেখা যাবে। এই সিদ্ধান্ত জনপ্রশাসন পার হয়ে অর্থ বিভাগে আছে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এটা শিগগরই ঘোষণা করা হবে। দ্বিতীয় ধাপের কাজ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এসে গেছে। এরপর তৃতীয় ধাপের কাজ হবে। আশা করছি, জুন মাসে সবগুলো ধাপ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
দাবি পূরণে সময় চেয়ে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘এই কাজটি শেষ করতে ২০ থেকে ২৫ কার্যদিবস লাগবে। সব মিলিয়ে আপনাদের দাবি-দাওয়া পূরণে আমরা ১২ সপ্তাহ সময় চেয়েছি। এখানে দুটি মন্ত্রণালয় জড়িত আছে। আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মতি নিয়ে কাজটা করছি। বিষয়টি নিয়ম মেনে করতে হচ্ছে।’
এরপর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন চিকিৎসকরা।
এর আগে, বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ন্যায্য পদোন্নতি ও সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিসিএস (স্বাস্থ্য) বিশেষজ্ঞ ফোরামের উদ্যোগে ও সব চিকিৎসা সোসাইটির সমর্থনে ৮, ৯ ও ১০ মার্চ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালিত হওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসকদের দাবিগুলো হলো-
১. চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও এমবিবিএস ডিগ্রির বৈশ্বিক স্বীকৃতি বজায় রাখতে পদোন্নতিযোগ্য সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অতি দ্রুত ও ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি নিশ্চিত করা এবং অন্তঃ ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা।
২. ৩ নম্বর গ্রেডে প্রাপ্ত সব যোগ্য চিকিৎসককে নির্দিষ্ট সময় পর ২য় ও ১ম গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান করে ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করা।
দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন চিকিৎসকরা।