ঢাকা | সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫ - ১০:৪২ অপরাহ্ন

শিরোনাম

চট্টগ্রামে লাখো সুন্নিজনতার অংশগ্রহণে জশনে জুলুস- পদদলিত হয়ে ২ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক

  • আপডেট: Saturday, September 6, 2025 - 1:21 pm

চট্টগ্রাম ব্যুরো।। আশেকে রাসূলের জন্মদিন উপলক্ষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫৪তম জশনে জুলুস। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ষোলশহর, বিবিরহাট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, দুই নম্বর গেট ও জিইসি মোড় এলাকায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। হামদ, নাত, দরুদ ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো নগর।

তবে আনন্দঘন এই আয়োজনে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে এবং অসুস্থ হয়ে মারা যান পটিয়ার আইয়ুব আলী (৬০) ও নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার সাইফুল ইসলাম (১৩)। দুপুর ১২টার দিকে মুরাদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত হন শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, একজনকে রাখা হয়েছে আইসিইউতে।

আহতদের হাসপাতালে নেন আনজুমানে রহমানিয়া ট্রাস্টের মেডিকেল টিম। তারা জানান, প্রচণ্ড গরম ও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে একাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পদদলিত হন।

ঐতিহ্যবাহী এ জুলুসের নেতৃত্ব দেন দরবারে সিরিকোটের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (ম.জি.আ.), সাহেবজাদা হজরত সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ, সৈয়দ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ এবং আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এবারের জুলুসে আনজুমান ট্রাস্ট পতাকা ছাড়া অন্য পতাকা, ড্রাম সেট, নারীর অংশগ্রহণ ও খাবার নিক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জুলুস শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জামেয়া মাদরাসার জুলুস মাঠে গিয়ে সমবেত হয়। সেখানে মাহফিল, জোহর নামাজ ও দেশ-জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

জশনে জুলুসকে ঘিরে নগরের বিভিন্ন স্থানে সুদৃশ্য তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও আলোসজ্জা করা হয়। ষোলশহর এলাকায় বসে ধর্মীয় পণ্য, পোশাক, আতর, ইসলামি বই ও খাবারের অস্থায়ী মেলা। ভক্তরা অংশগ্রহণকারীদের পানি, শরবত, ফল, মিষ্টি ও খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করেন।

নগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল। আনজুমান ট্রাস্টের মুখপাত্র অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার সবার প্রতি শৃঙ্খলা ও ঘোষিত নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের প্রবর্তন হয় ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল। দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের তৎকালীন সাজ্জাদানশীন আধ্যাত্মিক সাধক আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.) এ জুলুসের সূচনা করেন। তখন থেকে এটি হয়ে উঠেছে নবীপ্রেম ও বিশ্বশান্তির বার্তার প্রতীক।