ঢাকা | ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ - ৬:২৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম

গুম-খুনের তিন মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাবেক-বর্তমান ১৫ সেনা কর্মকর্তা

  • আপডেট: Sunday, December 14, 2025 - 11:58 am

আদালত প্রতিবেদক।। গুম-নির্যাতনের দুটি ও জুলাই-আগস্টে রামপুরা হত্যাযজ্ঞের একটি মামলায় গ্রেফতার সাবেক-বর্তমান ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

আজ সকালে পুলিশ হেফাজতে ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাদের হাজির করা হয়। তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

 

টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন। গত ৩ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার আবেদন জানান তিনি।

আসামিপক্ষের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য আজকের দিন ধার্য করে আদালত। এ মামলায় হাসিনা ও তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সাতজন পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতার রয়েছেন ১০ জন।

তারা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম ও কেএম আজাদ; কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন ও মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

এছাড়া জেআইসি সেল বা আয়নাঘরে গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা হয়। মামলায় গত ৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউর তাজুল ইসলাম।

জেআইসি সেলে সরকারবিরোধী ঘরানার লোকদের তুলে নিয়ে গুম-নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ২৬ জনের বীভৎসতা সামনে আনেন। এসব ঘটনায় পাঁচটি অভিযোগ এনে এ মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর। পরে স্টেট ডিফেন্স ও গ্রেফতার তিন আসামির পক্ষে সময় চাইলে শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

১৩ আসামির মধ্যে গ্রেফতার রয়েছেন তিন সেনা কর্মকর্তা। তারা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

শেখ হাসিনাসহ পলাতক অন্য আসামিরা হলেন–শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ ও লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক।

অন্যদিকে জ্বলাই বিপ্লবের সময় রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত ৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউর। পরে আসামিপক্ষের বক্তব্য তুলে ধরতে আজকের দিন ধার্য করে ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও সাবেক মেজর মো. রাফাত বিন আলম। এছাড়া ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান পলাতক রয়েছেন। আজ এসব মামলায় আসামিপক্ষের বক্তব্য শুনে পরবর্তী আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল।