গণঅভ্যূত্থান কোন একক গোষ্ঠীর কৃতিত্ব নয়: বুলু

জাগো জনতা অনলাইন।। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোন একক গোষ্ঠী বা সংগঠনের একক কর্তৃত্বে সংগঠিত হয়নি। বিগত ১৬-১৭ বছর বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে। ২০২৪ সালে ছাত্ররা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী পেশার মানুষ এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করলে ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আমরা ছাত্রদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সকলকে সম্মান করি। বিগত ১৭ বছর আন্দোলনে বিএনপি নেতকর্মীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে না পেরে খেতে-খামারে, বাগানে কাটিয়ে হত্যা, নির্যাতন ও গুমের শিকার হন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশন (বিআরজেএফ) কর্তৃক আয়োজিত জুলাই আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যূত্থানে মফস্বল সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, মুজিব পরিবারের কেউ স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ ১৯৭১ সনে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দিশেহারা জাতিকে উদ্ধারে নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণাসহ রনাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেন। ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ১৯৭১’র স্বাধীনতার যুদ্ধ, ১৯৯০’র স্বৈচরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, ২০২৪’র গণঅভ্যূত্থানে এদেশের কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতার আপামর মেহনতি মানুষের সক্রিয় অংশগ্রনেই এইসব আন্দোলন সফল হয়েছে।
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোট দিবেন একজনকে কিন্তু সংসদে কে প্রতিনিধিত্ব করবে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যাবে না।
সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমান উপদেষ্টাসহ কিছু রাজনৈতিক দল যে সব সংস্কারের বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন- এসব সংস্কারের রূপরেখা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা প্রস্তাব করেছেন তার মধ্যেই সব নিহিত আছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন রাকিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, সংবাদ মাধ্যমের সরকারি রেডিও, টেলিভিশন ও বাসস তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মূলধারার কোন সাংবাদিক এখন পর্যন্ত নিয়োগ পাননি। এই সরকারের আমলে বাসসে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টকে বসানো হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন- তাহলে সাংবাদিকরা যাবে কোথায়? আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবেন সাংবাদিকদের পাশে থাকার আহ্বান জানান এই নেতা।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ১৯৮০’র দশকে যুবসমাজকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বরকত উল্লাহ বুলু। ১৬/১৭ বছর সাংবাদিকরা আন্দোলন করে আসছে। এ পর্যন্ত ৬৬জন সাংবাদিককে জীবন দিতে হয়েছে। জুলাই-গণঅভ্যূত্থানে ৬জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে। সাংবাদিকরা ঘুষ, দুর্নীতি, অনাচার, খুন-গুমসহ যাদের বিরুদ্ধেই লিখেছে তাদের দ্বারা সাংবাদিকরা বেশি নিগৃহীত হয়েছে। গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে জীবন দিতে হয়েছে শুধুমাত্র চাঁদাবাজির ঘটনা ভিডিও ধারণের অপরাধে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য লায়ন আল আমিন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা নূর হোসেন জাহাঙ্গীর, জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকন, মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য এইচ এম আল আমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য এফ এম রাসেল পাটোয়ারী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ও সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সানজিদা আক্তার শবনম, বাংলাদেশ এডিটরস গিল্ডার্স এর সভাপতি বাদল চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ও সংগঠনের সহ-সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া মানিক।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।