খাগড়াছড়িতে ৬৪ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন

আরিফুল ইসলাম মহিন, খাগড়াছড়ি।।
শরতের রূপে উৎসবমুখর খাগড়াছড়ি। পদ্মফুল, শিউলির ঘ্রাণ আর হলুদ পাতার ছোঁয়ায় চারপাশে বইছে দেবী আগমনের বার্তা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে জেলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে প্রতিমা রঙের কাজ ও মণ্ডপ সাজানোর তোড়জোড়। এরই মধ্যে আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণেও প্রাণচাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য মতে, এ বছর খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলায় মোট ৬৪টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১টি, পানছড়িতে ১০টি, দীঘিনালায় ৯টি, মাটিরাঙায় ৯টি, গুইমারায় ৫টি, মানিকছড়িতে ৪টি, রামগড়ে ২টি, মহালছড়িতে ২টি এবং লক্ষিছড়িতে ১টি মণ্ডপে পূজা হবে।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দেবীর বোধন ও মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এ বছর দেবী দুর্গা হাতির পিঠে আগমন এবং দোলায় (পালকি) প্রস্থান করবেন।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং মোবাইল টহল। সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার মজুমদার জানান, “শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।” সাধারণ সম্পাদক তমাল তরুণ দাশ বলেন, “এ বছর মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি মণ্ডপের জন্য সরকারি সহায়তা, চাল বরাদ্দ ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এবং পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, সকলের সহযোগিতায় নির্ঝঞ্ঝাট ও আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব শেষ করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছেন।
এবার শঙ্কাহীন পরিবেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দুর্গোৎসবের আনন্দে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আয়োজকরা।