ঢাকা | অক্টোবর ২৯, ২০২৫ - ৯:৫৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র গুলিতে তিন পাহাড়ি নিহত, বিচারের দাবীতে পিসিসিপি’র বিক্ষোভ

  • আপডেট: Wednesday, October 29, 2025 - 6:47 pm

নিজস্ব প্রতিবেদক।। খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা এলাকায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হামলায় বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং গুলিতে তিনজন নিরীহ পাহাড়ি নাগরিক নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কয়ার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মুক্তমঞ্চে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপির উপদেষ্টা আব্দুল মজিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি এডভোকেট আফসার রনি এবং ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ।

বক্তারা বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকায় মিথ্যা ধর্ষণের ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরদিনই ইউপিডিএফ ও তাদের অঙ্গসংগঠনসমূহ গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ জনগণকে উস্কে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় সশস্ত্র ইউপিডিএফ সদস্যরা বাঙালি জনগণের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে সেনাবাহিনীর ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইট-পাটকেল ও গুলতি নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনজন অফিসারসহ সেনাবাহিনীর ১০ সদস্য আহত হন। একই সময়ে বিজিবির গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সংঘর্ষ চলাকালীন ইউপিডিএফ (মূল) দলের সশস্ত্র সদস্যরা পাহাড়ের চূড়া থেকে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে, যার ফলে তিনজন সাধারণ পাহাড়ি যুবক — আখ্র মারমা, আথুইপ্রু মারমা ও থৈইচিং মারমা — নিহত হন। স্থানীয়দের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজেও ইউপিডিএফের গুলিতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রমাণ মেলে।

পিসিসিপি নেতারা বলেন, ইউপিডিএফ একদিকে সাধারণ পাহাড়ি জনগণকে উস্কে দিয়ে বিক্ষোভ করায়, অন্যদিকে গোপনে তাদের ওপরই গুলি চালিয়ে হত্যা করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে সেনাবাহিনী ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দেশি-বিদেশি চাপ সৃষ্টি করা।

তারা আরও বলেন, এর আগেও ইউপিডিএফ ঘোষণা দিয়েছিল যে স্বায়ত্তশাসন না এলে পার্বত্য চট্টগ্রামে “সংকট” সৃষ্টি করা হবে। সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায়ই তারা বারবার পাহাড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।

বক্তারা দাবি জানান, রামসু বাজারে নিহত তিনজন পাহাড়ি যুবকের হত্যায় জড়িত সকল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

পিসিসিপি নেতারা দেশবাসীকে ইউপিডিএফের মিথ্যা প্রচারণা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গুটিকয়েক সন্ত্রাসীর ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না।”