কবি মাহফুজ রকির কবিতা “মা”

“মা”
কবি মাহফুজ রকি
সেই ছোট্ট রকি আমি, খেলায় ভুলে থাকি,
মায়ের ডাকে ছুটে যাই, ভাতের থালায় রাখি।
বাতাস বয়ে আনে সন্ধ্যা, ঘুমে চোখ ভরে,
তবু মায়ের হাতে চুপি, একপাটি চাদর ধরে।
চাই যে দিতে মাকে আজি জগতের সব দান,
তবু বুকে শুধু ব্যথা জমে—নাই যে সে সামর্থ্য প্রাণ।
হই যদি কোটিপতি, মুকুট হত তার শোভা,
তারি পায়ে রাখতেম সুখ, গাঁথতেম সোনার রোয়া।
জানি না সংসারের ব্যথা, না-জানি তার তপস্যা,
তবু মায়ের চোখে যেন, দুনিয়ার সর্বাশা।
চুপিচুপি রাতের বেলা, আমার কপাল ছুঁয়ে
ফিরিয়ে নেয় শত কষ্ট, আপন ক্লান্তি ধুঁয়ে।
আমি বলি “না খেতে ইচ্ছে”— মা হেসে বলে “আচ্ছা”,
নিজে না খেয়েও তুলে দেয়, প্রেমের আঁচল খাঁচা।
আমি ব্যথা পেলে কাঁদি, মা পায়লে হাসে,
আমি ভুলে যাই, মা রাখে স্মৃতির যতবাসে।
তাকে কি কেউ বোঝে হে, সে তো বায়ুর মতো,
দেখা যায় না, তবু বাঁচি, তারই নিঃশ্বাস পাতো।
আমার রাগে ঝড় উঠলে, মা হয় নদীর ধারা,
নরম কথা, শান্ত চোখে— মুছে দেয় ক্লান্তি সারা।
তুমি যদি চাও স্নেহের মুখ, ঠান্ডা এক আভাস,
তবে একবার মাকে দেখো— বুঝবে কোন সুখ সাঁস।
এই পৃথিবীর যত প্রেম, যত আলো, যত দান,
তার শতভাগের চেয়ে বেশী— মায়ের একটুখানি প্রাণ।
ভালোবাসা আছে বুকে, গোপনে তা ঝরে চোখে,
জানি না কেমনে বলি, অন্তরে সে ব্যথা আঁকে।
শুধু চাই—মা জানুক প্রিয়, এই প্রাণ শুধু তারই,
মায়ের মুখে থাকুক হাসি, চিরকাল সুখে সঞ্চারি।