ঢাকা | ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ - ১০:১৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম

এরশাদ উল্লাহ এবং হাদির ওপর এমন হামলা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চক্রান্ত

  • আপডেট: Saturday, December 13, 2025 - 7:03 pm

চট্টগ্রাম ব্যুরো।। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ এবং ঢাকা–৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত সশস্ত্র হামলায় জড়িত দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে সমাবেশটি নগরীর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সম্মুখে অনুষ্ঠিত হয় এবং বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর নূর আহাম্মদ সড়ক, লাভলেইন, চেরাগী মোড় হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।

এতে নগর বিএনপির সদস্য সচিব জনাব নাজিমুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন,
দেশ আজ এক ভয়াবহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নির্বাচনের মাঠে প্রতিযোগিতা নয়, বরং ভয় ও সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা জনগণের ভোটে আস্থা রাখে না, তারাই পরিকল্পিতভাবে প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলা চালিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এরশাদ উল্লাহ ও শরীফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা প্রমাণ করে—দেশে এখনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানেই শুধু ভোটের দিন নয়; এর আগে সমান সুযোগ, নিরাপদ প্রচারণা এবং নির্ভীক রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। অথচ আমরা দেখছি, বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমনে পরিকল্পিতভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে, হামলা চালানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে জনগণের আস্থা নষ্ট হবে এবং নির্বাচন তার অর্থ হারাবে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়িত্ব হলো সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—এ ধরনের হামলার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় জনগণই এর জবাব দেবে। বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় রাজপথে ছিল, আছে এবং প্রয়োজনে আরও শক্ত অবস্থান নেবে।

সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন,
স্বৈরাচার পতন হলেও দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ভঙ্গুর। পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখনো সক্রিয়, যা দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার গভীর ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, এই হামলাগুলো কোন পরিস্থিতিতে ও কোন সময়ে ঘটেছে, সেটাই এর রাজনৈতিক গুরুত্ব স্পষ্ট করে। নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যেই মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলা এবং তফসিল ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র আক্রমণ—এসবকে কোনোভাবেই সাধারণ অপরাধ বলা যায় না। এসব ঘটনা স্পষ্টভাবে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পরিকল্পিত ও সংগঠিত ষড়যন্ত্রেরই অংশ।

তিনি আরও বলেন, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে গভীর অবিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং নির্বাচনপূর্ব সময়ে পরিকল্পিতভাবে সংঘাত উসকে দিয়ে দেশকে অস্থির করে তোলাই এ ধরনের হামলার মূল উদ্দেশ্য। এসব ঘটনার মাধ্যমে একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে জনগণের স্বাভাবিক রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত ও সুসংগঠিত হামলা। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর একজন প্রার্থীকে লক্ষ্য করে এমন সশস্ত্র আক্রমণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, জড়িত সব ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং নির্বাচনী পরিবেশে পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন রক্ষায় আমরা আপসহীন।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, শওকত আজম খাজা, শিহাব উদ্দিন মোবিন, মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, এস এম আবুল ফয়েজ, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, মাহবুব রানা, নুর উদ্দিন হোসেন নুরু, মোহাম্মদ আজম, মোহাম্মদ ইউসুফ।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় শ্রমিক দলের নেতা শেখ নুরুল্লা বাহার ও জামাল, সাবেক যুবদল সভাপতি মোশারফ হোসেন দীপ্তি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বুলু, সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতীদলের আহ্বায়ক সেলিম হাফেজসহ থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।