ঢাকা | নভেম্বর ১, ২০২৫ - ৯:২২ অপরাহ্ন

শিরোনাম

এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেওয়ার পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের গণঅনশন

  • আপডেট: Saturday, November 1, 2025 - 6:03 pm

চট্টগ্রাম ব্যুরো।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও লালদিয়ার চর ইজারা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-এর উদ্যোগে শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এক গণঅনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্কপ কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস. কে. খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের খোরশেদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ. ম. জামাল উদ্দিন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মছিউদ্দৌলা, স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক রিজোয়ানুর রহমান খান, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নুরুল আবসার তৌহিদ, জাহেদ উদ্দিন শাহিন, শানেওয়াজ চৌধুরী মিনু, ইফতেখার কামাল খান, কাজী আনোয়ারুল হক হুনিসহ স্কপভুক্ত শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিইউসির কেন্দ্রীয় সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু।

বক্তব্যে মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এনসিটি বর্তমানে দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। অথচ এটিকে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী। এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”

তপন দত্ত বলেন, বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া এই একতরফা সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই চক্রান্ত জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। সরকারকে অবশ্যই এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় চট্টগ্রাম হরতাল ও অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে অচল করে দেওয়া হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো জনগণের সম্পদ রক্ষা করা, বিক্রি বা ইজারা দেওয়া নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। একই সঙ্গে বন্দর শ্রমিকদের হয়রানি ও অযৌক্তিক কারণ দর্শানো নোটিশের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

বক্তারা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাম্প্রতিক গণবিজ্ঞপ্তিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা বা পুলিশি বাধা দিয়ে কোনো ন্যায্য আন্দোলনকে দমন করা যায়নি, এবারও যাবে না। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে।”

অনশন কর্মসূচিতে স্কপ নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন— সরকার যদি অবিলম্বে এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা বাতিলের ঘোষণা না দেয়, তবে সার্বিক কর্মবিরতি, চট্টগ্রাম হরতাল ও বন্দর অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।