আশুলিয়ায় ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
ইউসুফ আলী খান: ঢাকার আশুলিয়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মারা যায় ফয়সাল কবীর (৩২) নামের এক ব্যবসায়ী। হত্যাকান্ডের কারণ খুঁজে বের করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার(৩০ই নভেম্বর) সন্ধ্যা আনুমানিক ছয়টার দিকে আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচট ইউনিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর মোটরসাইকেল যোগে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত ফয়সাল কবির ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার ধর্মদি দক্ষিনপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। সে মধ্য গাজীরচট এলাকার হেলাল খন্দকারের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। নিহত ফয়সাল স্থানীয় ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম খান এর অফিসে সহকারী হিসেবে কাজ করতো বলে জানা যায়। এছাড়া পাশাপাশি গার্মেন্টসে বিভিন্ন ব্যবসা করতেন।
জানা যায়, শনিবার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউনিক এলাকার কাজী বাড়ির সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৮-৯ জনের একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল যোগে এসে ফয়সালকে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনগণ ফয়সালকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গণসাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাথমিক ভাবে জানা যায় জমি দখলের বিরোধের জেড়েই খুন হয় ফয়সাল। তবে পরিবারের দাবী কোন শত্রু বা বিরোধ ছিল না।
নিহত ফয়সাল কবিরের ঘনিষ্ঠ বোরহানের সাথে কথা বলে জানা যায় বেশ কিছু তথ্য। আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অনিষ্পত্তি একটি জমি ঘিরে চলছে বিরোধ। একই জমি নিয়ে বেশ কয়েকজনের মধ্যে দশ বছরের বেশি সময় ধরে বিরোধ রয়েছে। তবে বোরহান ও ফয়সাল দুজনেই কাজ করতেন মালিক দাবী করা শারমিন রহমান নামের এক নারীর অধীনে।
মুঠোফোনে বোরহানের দাবী, আজকে ফয়সাল একাই বাইপাইল ঘিয়েছিলেন। সেখানে আমাকে মারার জন্য কয়েকজন বোরহানের বাড়িতে যায়। কিন্ত না পেয়ে ফয়সালের উপর হামলা করে। কে কে হামলা করেছে আগামীকাল নিজেই পরিষ্কার করে জানাবেন বলে জানান তিনি।
নিহতের ফয়সালের ছোট বোন আয়শা আক্তার মিশু বলেন, বিকেলে ফোন করে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফয়সাল। ছোট মেয়ে বেড়াতে যাওয়ার আবদার করে তাই সে ফোন করে বের হতে বলেন। কিন্ত মাঝ পথে গেলে আমাদের খবর দেয় কে বা কারা ভাইকে মেরেছে। খবর পেয়ে দৌড়ে সেখানে যাই। তবে সবাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি সে মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের কোন শত্রু ছিল না। সে কিছু দিন আগে চাকরি ছেড়েছেন। পাশাপাশি একটা ব্যবসা করতেন। তাই চাকরী টা ছেড়ে দিছেন।
এবিষয়ে আশুলিয়ার থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম রয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। খুব শিঘ্রই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এঘটনায় আশুলিয়ায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। খুনের পরিকল্পনা সম্পর্কে আগেই জানতেন কি’না তাকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, না না এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। জানলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।