আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে মৃতের সংখ্যা ৬২২ বলে জানিয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পাহাড়ি হিন্দুকুশ এলাকায় স্থানীয় সময় রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে এই ভূকম্প অনুভূত হয়। এলাকাটি পাকিস্তান সীমান্তের কাছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরের পূর্ব-উত্তরপূর্বের ৪২ কিলোমিটার দূরে। কেন্দ্রস্থলের গভীরতা তুলনামূলকভাবে কম, মাটির মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বিবিসি জানিয়েছে, জালালাবাদ দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের পঞ্চম বৃহত্তম শহর। ভূমিকম্পে নানগারহার ছাড়াও কুনার ও লগমান প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজধানী কাবুলেও কম্পন অনুভূত হয়।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তালেবান সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কয়েকটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে জানমালের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করছেন। কেন্দ্র থেকে ও আশপাশের প্রদেশগুলো থেকে সহায়ক দলও রওনা দিয়েছে।
কুনার ও নানগারহার প্রদেশের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, রোববার রাতেই তারা একাধিক পরাঘাত (আফটারশক) অনুভব করেছেন। নানগারহারের ২৮ বছর বয়সী পোলাদ নুরি বলেন, তিনি অন্তত ১৩ বার পরাঘাত অনুভব করেছেন। তাঁর এলাকার শত শত বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বের হন।
নুরি বলেন, ‘আমার জীবনে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প কখনো দেখিনি।’
উদ্ধারকাজে যুক্ত তালেবান প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। শুধু এই একটি উপত্যকাতেই ‘শত শত মানুষ’ নিহত বা আহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেননা, ভূমিকম্প কবলিত এলাকাগুলো দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত।
বিবিসিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে যে, ওই অঞ্চলের কোনো কোনো গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কুনার প্রদেশ। ভূমিধ্বসের কারণে সেখানে সড়কপথ বন্ধ হয়ে গেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবল কম্পনে কুনার প্রদেশের একাধিক দুর্গম জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।