অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের বিকল্প নেইঃ মজিবর রহমান
এম এইচ সৈকত।। পার্বত্য চট্রগ্রাম নাগরিক পরিষদের (পিসিএনপি) চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবরর রহমান বলেছেন, পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ অবধি অধিকার আদায়ে মানুষ নানা রকম কর্মসূচি গ্রহন করে থাকে। কিন্তু সেই আন্দোলন বা কর্মসূচী ততোক্ষণ পর্যন্ত সফল হয় না, যতক্ষণ তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ না হয়। তার মানে অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পার্বত্য চট্রগ্রামে যুগে যুগে অনেকই বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রাম করছিলো। এই সংগ্রামগগুলো বেশি প্রসারিত হতে পারে নাই একটি কারণে তা হলো আমাদের ঐক্য নেই।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর যাত্রবাড়ী এলকায় একটি হলরুমে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙালিদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন এগুলো নতুন কোন বিষয় না। যারাই বাঙালিদের অধিকার আদায়ে নেমেছে তাদেরকেই লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। তবুও কিন্তু বাঙালিদের দমিয়ে রাখতে পারেনি আর পারবেও না ইনশাআল্লাহ।
এসময় তিনি পার্বত্য চট্রগ্রামে নিয়োগের বৈষম্য নিয়ে বলেন, সরকারি সকল নিয়োগে বাঙালিদের বঞ্চিত করা হয়। বাঙালিদের যোগ্যতা থাকার পরও তারা সরকারি কোন চাকরিতে যোগদান করতে পারে না। যদিও কোন কোন নিয়োগে বাঙ্গালি নেয় তাহলে দেখা যাবে পাহাড়ি ২০ জন নিলে বাঙ্গালি ৩ জন। আসলে একই দেশে দুই আইন চলতে পারে না। কেউ খাবে আর কেউ শুধু অপেক্ষারত থাকবে এটা হতে পারে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এই বৈষম্যর তালা ভেঙে ফেলতে হবে।
তিনি হৃদয় হত্যা ও প্রতিবন্ধি কিশোরীকে ধর্ষণের উপযুক্ত বিচার দাবী করে বলেন, মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হলে বন্ধুকে হত্যা করে বন্ধুর মাংস খেতে পারে। এটা তো বন্ধুত্বের পরিচয় হলো না। বন্ধুই যদি হতো হৃদয়ের বাবা মায়ের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবী করতে পারতেন না। তারা এমনই বন্ধু মুক্তিপণ নেওয়ার পরও তাকে হত্যা করেছে। এদের আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার করতে হবে। পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙ্গালির উপর নির্যাতন জলে মিডিয়ায়ও নিউজ হয় না ঠকশোতে কেউ বলে না। অথচ পাহাড়ি কেউ নির্যাতনের শিকার না হতেই পুরো পৃথিবীতে এটাই আলোচনা থাকে। পার্বত্য চট্রগ্রামে প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণেই প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষনসহ হাজারো বাঙালিদের জীবন বলি দিতে হয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রদের ভূমিকা সামনে এনে বলেন, ৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রদের ভূমিকা অপরিসীম। পুরো পৃথিবীতে যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদেরই বড় ভূমিকা থাকে। তাই আমরা চাই পার্বত্য চট্রগ্রাম ছাত্র পরিষদ পাহাড়ে এমন ভূমিকা রাখবে যা পৃথিবীতে ইতিহাস হয়ে থাকবে।
এসময় তিনি সাম্প্রদায়িক বিষয় নিয়ে বলেন, আমাদেরকে বলা হয় সাম্প্রদায়িক। আসলে আমরা সাম্প্রদায়িক না বরং যারা বলে তারাই সাম্প্রদায়িক। তার কারণ বাঙালিদের এতো নেতা আছে অথচ কোন বাঙালিদের নেতা বলেনি পাহাড়িদের পার্বত্য চট্রগ্রামে থাকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু পাহাড়ীরা তাদের প্রত্যক প্রোগ্রামে বলে বাঙালিদের থাকতে দেওয়া যাবে না। আমরা চাই শান্তি। তারা চায় অশান্তি। তাহলে এতে বোঝা যায় কারা সাম্প্রদায়িক।
পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙালিদের উচ্ছেদের বিষয় নিয়ে কাজি মুজিব বলেন, বাঙালিদের উচ্ছেদ ও হত্যার অভিযান অনেক আগে থেকেই চলছে। তাই আমাদের ঘরে বসে থাকলে হবে না। এইসব বাধা অতিক্রম করতে একযোগে সবাইকে মাঠে নামতে হবে। তা না হলে খুব শ্রীঘ্রই বাঙালিদের অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাবে।
অুনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পিসিএনপির সহ-সভাপতি শেখ আহমেদ রাজু।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পিসিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির, পিসিএনপির ঢাকা মহানগর সভাপতি আব্দুল হামিদ রানা, পিসিএনপির ঢাকা মহানগর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, পিসিএনপির ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠান শেষে, ইব্রাহিম খলিল অপিকে সভাপতি ও রাসেল মাহমুদকে সাধরণ সম্পাদক করে ৪১ বিশিষ্টি ঢাকা মহানগরের ছাত্র পরিষদের কমিটি ঘোষণা করা হয়।