ঢাকা | অক্টোবর ১৩, ২০২৪ - ৫:৪৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম

লামা প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি কামরুজ্জামানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে

  • আপডেট: Friday, May 24, 2024 - 9:24 am

বান্দরবান প্রতিনিধি:

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে (বান্দরবারবান) লামা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল কর্তৃক লামা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে জনগনের মাঝে মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন করে তার উপর হামলা, ছিনতাই ও বিভিন্ন মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলার আসামী করাসহ তার পরিবার পরিজনের ক্ষতিসাধনের চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ আইনি ব্যবস্থা নেয়া দাবি সাংবাদিক মহলের।

২১ মে/২০২৪, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিকেল ৩.৩০ ঘটিকায় সাংবাদিক কামরুজ্জামানের স্ত্রী সন্তানরা ভোট দিতে কেন্দ্রে প্রবেশ করে। ঐসময় তিনি বাহিরে সদর রাস্তায় অপেক্ষমাণ। এসময় বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি বাঁশি বাজিয়ে কেন্দ্রের বাহিরের লোকজনকে সরিয়ে দেয়। তিনি বাহিরের দৃশ্যগুলো ফেসবুক লাইভ দিচ্ছিলো। লাইভে তিনি কি বলেছিল সেটা সবাই শুনেছেন। সেখানে পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন, কিছুক্ষনের মধ্যে সেখানে আনারস মার্কার প্রার্থী পৌঁছে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া বক্তব্য দিয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি করার উদ্দেশ্যে এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানকে গণপিটুনি দেয়ার জন্য কিছু মহিলাসহ ছাত্রলীগের কতিপয় ছেলেদেরকে ঈশারায় নির্দেশ দেন।

মোস্তফা জামাল বিভিন্ন মহলসহ সাংবাদিক কামরুজ্জামানকে জড়িয়ে সে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে এবং ছাত্রলীগের কর্মীদের উস্কে দেয়। ঐ সময় তিনি তাদের কাছ থেকে প্রায় দুই শ্ ফুট দূরুত্বে সদর রাস্তায় একজন পুলিশ এস আই এর সাথে কথা বলছিলো। এর কয়েকফুটের মধ্যে মধুঝিরি স্কুল (ভোট কেন্দ্র) এর গেইটের বাহিরে বিজিবির টহল দল ও ভিতরে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিল।

এরই মধ্যে শামীম উসমান, পিতা আব্দুল মজিদ, সাং ৭নং ওয়ার্ড মধুঝিরি ও তাছাদ্দেক হোসেন পিতা মোজাহের হোসেন, সাং ৬ নং ওয়ার্ড লামা পৌরসভা, নামের দুই (ছাত্রলীগ) সাংবাদিক কামরুজ্জামান এর নাম ধরে গালমন্দ করে দৌড়ে এসে তার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তাদের পেছনে অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী দৌড়ে আসে। ততক্ষনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তার পাশে এসে পরিচয় জেনে তাকে ছিনতাই ও হামলাকারীদের থেকে নিরাপত্তা দেন। সেই সময় তার স্ত্রী সন্তানদেরকে, গতিরোধ করার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। সেখানে ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া তার ছোট ছেলেটি রাস্তায় এসব দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে কাঁপতে থাকে। তার পরিবারের ৫ সদস্যের মধ্যে ৪ জনই ভোটার। সুতরাং বাসায় তালা মেরে ছোট শিশুকেও সাথে নিয়ে ভোট দিতে যায়। এসব কিছুর মধ্যে সে বিজ্ঞ নির্বাহী মেজিস্ট্রেট এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে প্রেসক্লাবে চলে যায়। এরই মধ্যে তাকে মারার জন্য তিন দলে বিভক্ত করে আনারস মার্কার সমর্থকরা কিছু উচ্ছৃঙ্খল নারী ও কিশোর যুবকদেরকে ভাড়া করে। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা সাংবাদিক কামরুজ্জামানকে গনধোলাই দিয়ে তাড়িয়েছে এবং সে পালিয়ে গেছে ইত্যাদি আরো মানহানিকর কথা লিখে প্রচার করে। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন। সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা করতে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলা সাজাচ্ছে বলেও জানাযায়।

সাংবাদিক কামরুজ্জামান নিজেকে অনিরাপদ দাবি করে বলেন, “শীর্ষস্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি যখন আমাকে গণধোলাইয়ের মাধ্যমে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়; তখন আমি ও আমার পরিবার পরিজনের নিরাপত্তা আর কোথায় থাকতে পারে(!)। আমি লামা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক সরেজমিন পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে এলাকার সংবাদ সংগ্রহ ও প্রেরণ করে আসছি। উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল
আমার লিখনিতে কখনো মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন হয়তো। আরেকটি কারণ হচ্ছে, আমি এবারের ৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য দু’জন প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলাম। যা তিনি আমাদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্রের শত ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে জনসমাগ ঘটিয়ে দেয়া বক্তব্যে চরমভাবে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ করেছেন। আরো একটি কারণ যেগুলো তা হচ্ছে, আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে, কেন্দ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সচেষ্টতা, আন্তরিকতা দিয়ে ভোটারদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন; ইত্যাদি বিষয়ে ফেসবুক লাইভ করেছি। এছাড়া দুপুরের আগে, শামীম ওসমান গংরা কেন্দ্রের পাশে সদর রাস্তায় আনারসের স্লোগান দিচ্ছিল, আমি সেটা ফেসবুক লাইভ করেছিলাম। কারন আমি একজন সংবাদ কর্মি হিসেবে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে মর্মে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলাম। সারাদিন যে কয়েকটি ফেসবুক লাইভ করেছি, তার সব কিছু রেকর্ড যাচায় করলে পাওয়া যাবে। তিনি দেশের সকল সংবাদ সেবের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই বিষয়ে আমার আর কি বা করার ছিলো(?)। এই ঘটনার জন্য একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে আমি কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি জানিনা। তবে আমাদের উপজেলার যিঁনি কর্ণধার হিসেবে আবারো জনতার রায় পেয়েছেন, তার আচরণ যে, মোটেও দায়িত্বশীল ছিলোনা তা জানতে পারলাম।

সাংবাদিক কামরুজ্জামান আরো বলেন, “অত্যান্ত পরিতাপের বিষয়, নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমাকে নানাভাবে হামলা, মামলা প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। গভীর রাতে চেনা পরিচিত কিছু পেতি মাস্তান লেলিয়ে দিয়ে কতিপয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদ্বয় আমার পরিবার সন্তানদেরকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি বিনয়ের সাথে সম্মান শ্রদ্ধা ও আস্থা নিয়ে বিজ্ঞ বিচারকদের মনোযোগ ও আশ্রয় প্রার্থনা করছি যে, আমি কোনো দিক থেকে নিরাপত্তা বোধ করছিনা। কারণ ক্ষমতাসিন লামা উপজেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল এর শ্যালক বিজ্ঞ লামা কোটের একজন আইনজীবী আমিসহ আমাদের সাংবাদিকদেরকে সরাসরি মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছেন। সাংবাদিকতার বাহিরে সমাজ পরিচালনায় প্রতিনিধি নির্বাচনে আমাদের কোনো চয়েজ থাকাটা যদি অপরাধ হয়? তা হলে আমরা অপরাধী। কিন্তু এই বিচার কোনো সন্ত্রাস বাহিনীদ্বারা হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে করার নিয়মতো নেই। তিনি বলেন “এই মাসের ৩ তারিখ ছিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। আমরা গণমাধ্যম কর্মিরা কতটুকু নিরাপদ রয়েছি(?)। সাংবাদিকতার বাহিরে কামরুজ্জামান পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লামা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রী কমিটির ত্রাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক। তিনি জাগো জনতাকে বলেন, “যারা পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফ’কে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন, মূলতঃ তাদের দোসররা পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সহিংস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলা লোকগুলোকে দমিয়ে রাখাও একটি হীন ষড়যন্ত্রের অংশ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের অসীম সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা চাচ্ছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু পাহাড়ে একটি ক্ষমতালোভী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মুখোশ পরে এই অঞ্চলকে পূর্ব তিমুর বানানোর ষড়যন্ত্রকারীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে।”

তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর তার নিরাপত্তা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদেরকে সহায়তা দানকারীদের চিহ্নিত করণে গোয়েন্দা সংস্থা সমুহকে নির্দেশ দানের দাবি করেন।