ঢাকা | ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪ - ৮:০৫ পূর্বাহ্ন

মায়ানমারে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে জান্তা সরকার : আরাকান আর্মি

  • আপডেট: Monday, March 4, 2024 - 5:59 am

জাগোজনতা ডেস্ক: মিয়ানমারের জান্তা সরকার পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে বলে দাবি করেছে রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।

রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তের কাছে পোন্নাগাউন শহরে অবস্থিত জান্তা সরকারের লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি) ৫৫০-এর প্রধান ঘাঁটি দখলের কাছাকাছি বলে দাবি করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। রাখাইনের রাজধানীর ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থান জান্তা সরকারের শক্তিশালী এ ব্যাটালিয়নের। সম্প্রতি এ ব্যাটালিয়নকে লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে বিদ্রোহীরা। এছাড়া দ্রুতই এ ব্যাটালিয়নকে পরাস্ত করে এর সদর দপ্তর দখলে নেয়ার কথা জানিয়েছে তারা।

গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পোন্নাগাউন শহরে হামলা শুরু করেছে আরাকান আর্মির সশস্ত্র বাহিনী। তারা এলআইবি ৫০০-এর বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে। রাজধানীর আমিইন্ট কিয়ুন গ্রামের কাছে জান্তার দুটি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করছে আরাকানের এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পোন্নাগাউনের এলআইবি ৫৫০-এর সদর দপ্তরের কাছে একটি থানা দখল করে নেয় এএ।

থানাটি দখলের পর সেখানের ২৩ পুলিশ কর্মকর্তা বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পর্যাপ্ত গোলাবারুদ সরবরাহ না থাকায় এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলিতে বাধা দেয়ায় তারা বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ সদস্য।

গত মাসে সিত্তের মিলিটারি বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালে জান্তার বেশ কয়েকজন সদস্যসহ অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা রাজধানী ছেড়ে পালিয়েছে গেছে। স্থল হামলার পাশাপাশি জলপথেও বেশ অগ্রসর হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর যোদ্ধারা।

তাদের আক্রমণের মুখে মিয়ানমার সামরিক জান্তার নৌবাহিনীর বিভিন্ন দুর্বল দিক প্রকাশ পাচ্ছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে দেশটির নৌবাহিনী কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেনি।

ইরাওয়াদ্দি বদ্বীপের বার্মা কমিউনিস্ট পার্টি ও কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া দেশটির কোনো সংঘাতে নৌবাহিনীকে মোতায়েন করা হয়নি।

কাচিন, শান ও কারেন পাহাড়ে যখন দেশটির সেনাবাহিনী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত ছিল তখন মিয়ানমার নৌবাহিনীকে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যায়নি।

১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর দেশটিতে নৌবাহিনী গঠিত হয়। তবে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত তেমন বিস্তৃত হয়নি বাহিনীটি।
বর্তমানে এ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১৯ হাজার। এ বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ রয়েছে ১২২টি, যার মধ্যে দুটি সাবমেরিন ও চারটি ফ্রিগেট রয়েছে।

মিয়ানমারজুড়ে নৌবাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ড রয়েছে মাত্র পাঁচটি। মোন রাজ্যের মাওলামাইন, রাখাইনের কিয়াউকফিউ, আইয়াওয়াদির হাইগি দ্বীপ ও তানিনথারি অঞ্চলের মায়েইকে এসব নৌ-কমান্ড অবস্থিত।

মিয়ানমারের নৌবাহিনীর যুদ্ধ অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে বলে মনে করে আরাকান আর্মি। তারা বলছে, রাখাইন উপকূলে যৌথ সামরিক মহড়া ব্যতীত এ বাহিনীর কোনো ভূমিকা নেই। ফলে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত নাট, মায়ু, কালাদান, লেমিও, থানজিট, কালেইন্টাংসহ বড় নদীগুলোয় নৌযুদ্ধে তাদের পরাস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠীর। ইরাবতী